সারা বিশ্ব থেকে সৌদি আরবে জড়ো হওয়া প্রায় ২০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান গতকাল মঙ্গলবার শেষ করেছেন হজ পালনের আনুষ্ঠানিকতা।
এর আগে শনিবার হাজিরা আরাফাতের ময়দানে হাজির হয়ে যোগ দেন হজের মূল অনুষ্ঠানে। আর রবিবার ঈদুল আজহার দিন পশু কোরবানি দেন তাঁরা। এরপর মঙ্গলবার জামারতে শয়তানের উদ্দেশে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে শেষ হয় হজের আনুষ্ঠানিকতা।
পবিত্র হজ পালনের জন্য মক্কায় সমবেত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা গত বৃহস্পতিবার মিনায় পৌঁছান। এর মাধ্যমে শুরু হয় হজের আনুষ্ঠানিকতা। হজের অংশ হিসেবে তাঁরা ৭ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনা, আরাফাত, মুজদালিফা ও মক্কায় অবস্থান করেন।
স্থানীয় সময় গত ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর নিজ নিজ মুয়াল্লিম কার্যালয় কিংবা মসজিদুল হারাম (কাবা শরিফ) থেকে হজের নিয়ত করে মিনার উদ্দেশে রওনা হন হজযাত্রীরা। তাঁদের পরনে সেলাইবিহীন দুই টুকরা সাদা কাপড়। মিনামুখী পুরো রাস্তায় ছিল হজযাত্রীদের স্রোত। কেউ বাসে, কেউ গাড়িতে, কেউ বা হেঁটে মক্কা থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন। তাঁদের মুখে ছিল ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।’
শুক্রবার হজযাত্রীরা মিনায় অবস্থান করেন। শনিবার ফজরের নামাজ আদায় করে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে যান এবং সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে থাকেন। এরপর প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় গিয়ে রাত যাপন ও পাথর সংগ্রহ করেন তাঁরা। রবিবার ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে মিনায় ফেরেন।
হাজিরা মিনায় বড় শয়তানকে পাথর মারেন, কোরবানি দেন এবং মাথা মুণ্ডন বা ন্যাড়া করেন। এরপর মক্কায় গিয়ে কাবা শরিফ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়া সায়ি করেন। তাওয়াফ ও সায়ি শেষে আবার মিনায় ফিরে সোম ও মঙ্গলবার অবস্থান করেন। সেখানে প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করেন তাঁরা।
প্রত্যেক শয়তানকে সাতটি করে পাথর মারতে হয়। মসজিদে খায়েফের দিক থেকে মক্কার দিকে আসার সময় প্রথমে জামারায় সগির বা ছোট শয়তান, এরপর জামারায় ওস্তা বা মেজো শয়তান, এরপর জামারায় আকাবা বা বড় শয়তানকে পাথর মারতে হয়। শয়তানের প্রতি ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এই পাথর নিক্ষেপ করা হয়।
আগামী ১৭ আগস্ট বিমানের প্রথম ফিরতি হজ ফ্লাইটের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি হাজিদের দেশে ফেরা শুরু হবে বলে জানা গেছে।