যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের এল পাসোতে বন্দুক হামলায় বেঁচে যাওয়া ও উদ্ধারকর্মীদের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল বুধবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টেক্সাস ও ওহাইওয় অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। প্রথমে ওহাইওর ডেটনে যান তিনি। পরে সেখান থেকে চলে যান টেক্সাসে।
টেক্সাস বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পকে স্বাগত জানান অঙ্গরাজ্যের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট এবং এল পাসোর মেয়র ডি মার্গো। প্রথমে তাঁরা শহরের ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারে যান। সেখানে আহত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নেন প্রেসিডেন্ট। হাসপাতালকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেন। পরে শহরের জরুরি অপারেশন সেন্টার পরিদর্শন করেন।
এ সময় রাস্তায় প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। কিছু কিছু প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘ফিরে যাও, তুমি এখানে স্বাগত না’, ‘ট্রাম্পের বিদ্বেষমূলক বর্ণবাদ এখানে স্বাগত না’।
এল পাসোর ডেমোক্রেটিক মেয়র ভেরোনিকা এসকোবার ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। তিনি বলেন, ‘তাঁর (ট্রাম্প) বর্ণবাদী ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য আমার সম্প্রদায় ও দেশের মানুষের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
তবে সবকিছু মিলিয়ে এই সফর ‘চমৎকার’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। ওহাইওতে মানুষের ভালোবাসা ও সম্মানে আপ্লুত তার প্রেসিডেন্সি।
এর আগে ওয়াশিংটন ছাড়ার আগে ট্রাম্প বলেন, ‘যেকোনো গ্রুপের মধ্যে বিদ্বেষের উত্থানের বিষয়ে আমি উদ্বিগ্ন…তা শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যই হোক বা অন্য কোনো আধিপত্যবাদ।’ ওই দিন ট্রাম্প বলেন, ‘আমি চাই না কোনো অসুস্থ ব্যক্তির হাতে অস্ত্র পড়ুক। অস্ত্র কেনার আগে ব্যাকগ্রাউন্ড পরীক্ষা করে নেওয়ার বিষয়টিতে নজর দেওয়া হবে।’
গত শনিবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের এল পাসো এলাকার সিয়েলো ভিস্তা শপিং মলে ওয়ালমার্টের একটি স্টোরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আট মেক্সিকানসহ নিহত হন ২২ জন। পরে ১৩ ঘণ্টা পর একই ধরনের হামলা হয় ওহাইওর ডেটনে। আহত হন অনেকে। অভিবাসীদের প্রতি ঘৃণা এবং শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ থেকেই এল পাসো হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। মেক্সিকোর অধিকাংশ নাগরিকের ধারণা, মূলত হিসপানিক এবং মেক্সিকোবাসীদের লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়। জানা যায়, এল পাসোর হামলার আগে চার পৃষ্ঠার একটি ইশতেহার এইট-চ্যান নামে একটি অনলাইন মেসেজ বোর্ডে পোস্ট করা হয়েছিল। এ প্ল্যাটফর্ম সাধারণত উগ্রবাদীরা ব্যবহার করে। ইশতেহারটি আটক সন্দেহভাজনেরই পোস্ট করা বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই ইশতেহারে হিসপানিকদের বিরুদ্ধে যে ধারণা পোষণ করা হয়েছে, তা যেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কথারই প্রতিধ্বনি। একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে ট্রাম্পের জাতিগত ও বর্ণবিদ্বেষমূলক আচরণ ও ভাষণের কারণে দেশের পরিবেশ নাজুক হয়ে পড়ছে বলে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছেন ট্রাম্প।