চলচ্চিত্র অঙ্গনে আবার ডেঙ্গু হানা। এবার চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববি ডেঙ্গু জ্বরে ধরাশায়ী। গত সোমবার রাতে তাঁর ডেঙ্গু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকেরা। আজ বুধবারও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সেই পরীক্ষার ওপর নির্ভর করে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে।
প্রথম আলোকে ববির ডেঙ্গু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ববির সাম্প্রতিক চলচ্চিত্র ‘নোলক’-এর পরিচালক এবং বন্ধু সাকিব সনেট। আজ দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ৩ আগস্ট রাতে রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছিল। পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে ববির ডেঙ্গু পজিটিভ। চিকিৎসা চলছে। আজ বুধবার একটি পরীক্ষা করা হবে। এরপর হাসপাতালের ভর্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে চিত্রনায়ক আলমগীরও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানের তিনি বাসায় বিশ্রাম করছেন।
জানা গেছে, হাসপাতালে ভর্তির আগে কয়েক দিন ধরেই জ্বর অনুভব করেছিলেন ববি। গতকাল রাত নয়টার দিকে হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। তখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।
গত ঈদে মুক্তি পেয়েছিল অভিনেতা শাকিব খান ও ববি অভিনীত ছবি ‘নোলক’। বেশ আলোচিত হয়েছিল ছবিটি। আগামী ঈদে ববি অভিনীত ‘বেপরোয়া’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা। এতে ববির বিপরীতে প্রথমবারের মতো চিত্রনায়ক জিয়াউল হক রোশান অভিনয় করেছেন। রাজা চন্দ্র পরিচালিত ছবিটি প্রযোজনা করেছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। মূলত, মডেলিং ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্যই পরিচিত ববি। তবে প্রযোজক হিসেবেও কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তার। ২০১৪ সালে সিনেমা প্রযোজনা করেন তিনি। সম্প্রতি ৮৬ ভোট পেয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির নির্বাচনে জিতেছিলেন চিত্রনায়িকা ববি।
এর আগে গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অভিনেতা ও নির্মাতা আলমগীর। আলমগীরের মেয়ে সংগীতশিল্পী আঁখি আলমগীর বলেন, ‘আব্বু আগের তুলনায় বেশ খানিকটা ভালো, তবে শরীর খুব দুর্বল।’
ডেঙ্গু বিস্তার রোধ ইতিমধ্যে মানববন্ধন, র্যালিসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছেন চলচ্চিত্র ও ছোট পর্দার শিল্পী ও কলাকুশলীরা। তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, তথ্য সচিব আবদুল মালেক, চলচ্চিত্র প্রযোজক, চলচ্চিত্র পরিচালক, শিল্পী, কলাকুশলীসহ বিএফডিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিলে বিএফডিসি ও তার সামনের রাস্তায় ঝাড়ু হাতে ও ফগার মেশিন নিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় অংশ নিতেও দেখা যায়।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় অংশগ্রহণের কিছু ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়, যা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন তাঁরা। অনেকের প্রশ্ন ছিল, পরিষ্কার রাস্তায় এ ধরনের কর্মসূচি কেন বা ঝাড়ু ব্যবহার করে আদৌ মশক নিধন হয় কি না? সমালোচনা হয় এটি লোকদেখানো কার্যক্রম বলেও!
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান এ বিষয়ে কথা বলেন প্রথম আলোর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সমাজের বিভিন্ন সমস্যা যেমন শিল্পীরা তুলে ধরেন, তেমনি সমস্যার সমাধানেও তাঁরা প্রতীকী কার্যক্রমের মাধ্যমে অপরিসীম ভূমিকা রাখতে পারেন। বর্তমানে ডেঙ্গু রোগ আমাদের দেশে বিশেষ করে ঢাকা শহরে মহামারি আকার ধারণ করেছে। আর এর সমাধানের জন্য সবচেয়ে বেশি যা দরকার, তা হলো আমাদের সমাজের প্রত্যেকটি স্তরের মানুষের সচেতনতা এবং আমাদের বাসস্থানসহ আশপাশের পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা। আর এই সচেতনতা ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম আরও বেগবান করতেই চলচ্চিত্রশিল্পীরা নিজেদেরই কর্মস্থল এফডিসিসহ আরও কয়েকটি স্থানে ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রম চালান, মাইকের মাধ্যমে মিডিয়ায় নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন, চারপাশের আবর্জনা ঝাড় দেন এবং ফগার মেশিন দিয়ে মশা দমন করেন। এটি ছিল একটি প্রতীকী কার্যক্রম এবং এর উদ্দেশ্য কেবল সাধারণ মানুষজনকে ডেঙ্গু হতে প্রতিকার পাওয়ার জন্য সবাইকে সচেতন করা।’