লন্ডনে বিবিসি বাংলার সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঘটনা চক্রে কিছু ঘটনা হয় তো ঘটতে পারে। গত ১০ বছরে এই ব্যাপরে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। যখন আমি নিজের বাবা-মা, ভাই-বোনকে হারালাম খুনিদেরকে বিচার না করেন তাদের ইনডেমনিটি দেয়া হলো। অর্থাৎ অপরাধকে প্রশ্রয় দেয়া হল। আমাদের তো বিচার পেতে ৩৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। যে দেশে অপরাধকে স্বীকৃতি দিয়েই একটি সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়, সেই দেশে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায়।
বিবিসির মানসী বড়ুয়ার কছে দেওয়া দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের এবং জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে যে কোনো উস্কানির বিরুদ্ধে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হয়। কিন্তু শুধুমাত্র সরকারের সমালোচনা করতে মিডিয়াকে বাধা দেয়া হয় না। বিবিসি বাংলাকে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, গণতন্ত্র, অনাদায়ী ব্যাংক ঋণ এবং হেফাজতে মৃত্যু ও নির্যাতন নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নির্যাতনের বিষয়টি আমরা বন্ধ করতে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। এখন সেইভাবে হেফাজতে মৃত্যু হয় না। নির্যাতনও যে তেমন করা হয় তা না তবে, আন্তজার্তিকভাবে অপরাধীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য কতোগুলো নিয়ম আছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি সংস্থাকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী অপরাধীর কাছ থেকে তথ্য নিতে চান, সেখানে আন্তর্জাতিকভাবে যা যা করা হয় তার বাইরে কিছু করা হয় না।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতাকে হত্যা করা হলো। এই কালচারটাই চলে আসলো এবং এটাই প্রচলিত হলো। সেখান থেকে ফিরিয়ে একটি গণতান্ত্রিক ধারায় নিয়ে আসা যেখানে মিলিটারি শাসন চলছিলো। কখনো সরাসারি কখনো নাম পরিবর্তন করে। মূলত ক্ষমতা ক্যান্টনমেন্টের ভেতরেই ছিলো, এটিই হলো বাস্তবতা। এই যে কালচার দীর্ঘ বছরের পর বছর চলেছে, সেখান থেকে ফিরিয়ে দেশেকে একটি সুষ্ঠু ধারায় নিয়ে আসা কঠিন দায়িত্ব। এই কঠিন দায়িত্বটি আমরা পালন করে যাচ্ছি। কাজেই এখন যারা বলছে সুনির্দিষ্টভাবে জিজ্ঞাসা করেন, আমার মনে হয় তারা তেমন কোনো তথ্য দিতে পারবে না। একটা শ্রেণি আছে যারা এই অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের ভেতর একটা অসাংবিধানিক বা অস্বাভাবিক সরকার অথবা ইমার্জেন্সি সরকার বা মিলিটারি রোলার আসলে তাদের খুব দাম বেড়ে যায়। খুটিনাটি বিষয় নিয়ে তারা সারাক্ষণ আমাদের পেছনে লেগেই থাকে। কিন্তু আমার কথা হলো দেশের মানুষ ভালো আছে কিনা।
অর্থনৈতিক বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৫-৬ সালে দেশে দারিদ্রের হার ৪১ ভাগের ওপরে ছিলো কিন্তু তা কমে ২১.৪ ভাগে কমে এসেছে। মাত্র ১০ বছরে তা অর্জন করতে পেরেছি। মাথাপিছু আয় মাত্র যা মাত্র ৪’শ-৫’শ মার্কিন ডলার ছিলো, তা থেকে ২ হাজার মার্কিন ডলারে পৌঁছে যাচ্ছি। প্রবৃদ্ধি যখন বাড়তে থাকে, সাথে মূল স্ফিতিও বাড়তে থাকে কিন্তু তা আমরা বাড়তে দেইনি, নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। খুব স্বাভাবিকভাবে যার সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছায়।
তিনি আরো বলেন, আদিকাল থেকে মানুষের মাঝে একটি প্রবণতা আছে, অন্য জায়গাতে গিয়ে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হবে। তার সাথে দারিদ্রের যে বিষয় তা যুক্ত করতে পারেন না। এটি হলো এক ধরনের প্রবণতা। এখন কেউ যদি দেশে কাজ করতে চায়, সেক্ষেত্রে যুবকদের বিনা জামানতে লোন দেয়ার করে দিয়েছে সরকার