বলিউড তারকাদের ভেতর একটা বিশেষ কারণ দীপিকাকে অন্য সবার থেকে আলাদা করেছে। অন্যরা যেখানে গণমাধ্যমে নিজেদের হতাশা লুকাতে ব্যস্ত, দীপিকা পাড়ুকোন সেখানে আয়োজন করে নিজের হতাশার বিষয়ে কথা বলেছেন। বলেছেন, মনের অসুখ ছোট নয়। মানসিক স্বাস্থ্যকে মোটেই হেলাফেলা করা যাবে না। দীপিকা পাড়ুকোন অনেককেই এই বার্তা দিতে পেরেছেন। মন খুলে বলেছেন বিষণ্নতার সঙ্গে নিজের যুদ্ধের কথা।
শুধু তা-ই নয়, হতাশাকে স্বাভাবিক ও মহামারি রোগ বলে ঘোষণা করেছেন তিনি। আর মানসিক সমস্যাবিষয়ক সচেতনতা গড়তে নিজের একটা সংস্থাও চালু করেছেন, যার নাম দ্য লিভ লাভ লাফ ফাউন্ডেশন। তিনি মনে করেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একজন মনোরোগবিশেষজ্ঞ দরকার। হতাশা মানুষকে গ্রাস করে ধীরে ধীরে। আবার কোন মুহূর্তে হতাশা বাতাসে মিলিয়ে যায় তা-ও ধরা যায় না। দীপিকার ভাষায়, ‘ধরুন আপনাকে নিয়ে বিমানটা মেঘের ভেতর দিয়েই যাচ্ছে, হঠাৎ মেঘ সরে গেল, আর আপনি সূর্যটা দেখতে পেলেন, হতাশা কেটে যাওয়ার অনুভূতি অনেকটা তেমন।’
সম্প্রতি ফিল্মফেয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আবারও কথা বলেছেন নিজের বিষণ্নতা নিয়ে। বলেছেন, ‘ডিপ্রেশনের দিনগুলোতে কেবল একটা শব্দই আমার অনুভূতিকে বর্ণনা করতে পারে। সংগ্রাম। প্রতিটি মুহূর্তে আমি সংগ্রাম করেছি। পুরোটা সময় আমার নিজেকে কেবল বিধ্বস্ত মনে হতো। অনেকে এই অনুভূতিকে মন খারাপ ভেবে ভুল করত। কিন্তু এটা মন খারাপ থেকে অনেক ভয়াবহ পরিস্থিতি।’
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সালমান খান দীপিকা পাড়ুকোনের নাম উল্লেখ না করে বলেছিলেন, ‘ইদানীং অনেককেই দেখা যায় “আমি হতাশ, আমি বিষণ্ন, আমার মন খারাপ” এগুলো বলতে। আর এই শব্দগুলোকে অনেক বেশি মনোযোগ আর গুরুত্ব দিতে। আমার হতাশা বা বিষণ্নতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার মতো বিলাসিতা করার সময় নেই, সুযোগও নেই।’
আবারও সালমান খানের সেই বিতর্কিত মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন দীপিকা। বলেছেন, ‘একজন বড় পুরুষ তারকা একবার মন্তব্য করেছিলেন তিনি নাকি বিষণ্ন হওয়ার মতো বিলাসী নন। যেন বিষণ্নতা একটা বিলাসিতা। যেন মানুষ বিষণ্ন হবে কি হবে না, সেই সিদ্ধান্ত তার নিজের। এসব মিথ ভাঙার সময় হয়েছে।’ দীপিকা আরও বলেন, শেষবার তিনি যখন বিষণ্নতা লিখে গুগল করেছিলেন, মানসিক রোগই দেখেছিলেন।
এ সময় দীপিকা হতাশা, বিষণ্নতা নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলার অনুভূতিও জানান। বলেন, ‘যখন আমি সবার থেকে আড়াল করা, চেপে রাখা অনুভূতিগুলো নিয়ে কথা বললাম, যেন মুক্তি পেলাম। যেন আমার কাঁধের ওপর কেউ খুব ভারী কিছু একটা চেপে বসে ছিল, সেটা নেমে গেল। আমি হঠাৎ করেই স্বাধীনতার সুখ পেলাম।’