ডেঙ্গুতে প্রাথমিক শিক্ষকের মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পরেই এবার এক কলেজ ছাত্রীর মৃত্যু হলো পশ্চিমবঙ্গের হাবড়াতে। মৃত ছাত্রীর নাম অঙ্কিতা শিকদার ( ১৭ )। হাবড়া পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আক্রমপুর এলাকার বাসিন্দা অঙ্কিতা হাবড়া চৈতন্য কলেজে ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছিল।
পরিবার সূত্রে খবর, গত বুধবার কলেজ থেকে ফেরার সময় জ্বর জ্বর লাগছিল অঙ্কিতার। তাই নিজেই দোকান থেকে ওষুধ কিনে বাড়ি নিয়ে আসে সে। বাড়ি ফেরার পর থেকে শরীর আরও খারাপ হয়ে যায়। জ্বর বাড়তে থাকে। অঙ্কিতার বাবা অপূর্ব শিকদার ব্যাঙ্কের কর্মী। তবে অন্য রাজ্যে কর্মরত তিনি। মেয়ের শরীর খারাপের খবর শুনে বৃহস্পতিবারই তিনি বাড়ি ফিরে আসেন।
প্রথমে এক প্রাইভেট ডাক্তারকে দেখায় অঙ্কিতার পরিবার। তিনি ওষুধও দেন। তবে জ্বর কমেনি। শুক্রবার রাত থেকে বমি করতে শুরু করে অঙ্কিতা। শনিবার সকালে তাকে হাবড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে তাকে বারাসাত স্টেট জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল তার। প্রাথমিক লক্ষ্মণ দেখে সেখানে ডাক্তাররা জানান, ডেঙ্গু হয়েছে অঙ্কিতার।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্লেটলেট সাংঘাতিকভাবে কমে গিয়েছিল অঙ্কিতার। আগে থেকে ডেঙ্গু ধরা না পড়ায় ঠিকভাবে চিকিৎসা করা যায়নি। অবশেষে শনিবার রাত ৮টা নাগাদ মৃত্যু হয় তার। অঙ্কিতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারে।
অঙ্কিতার আগে বিরা এলাকার একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ধীমান কান্তি মল্লিকের ( ৪১ ) রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ার পরে মঙ্গলবার বারাসাতের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় তাঁকে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে নিয়ে আসা হয় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই শুক্রবার বিকেলে মৃত্যু হয় তাঁর।
পরপর ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দুজনের মৃত্যুর পর ক্ষোভে ফুটছেন হাবড়ার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা খারাপ। পুরসভার পক্ষ থেকে ঠিকমতো ব্লিচিং পাউডার বা মশা মারার স্প্রে ছড়ানো হয় না। গোটা এলাকায় ঝোপজঙ্গল। সাফাই অভিযান না হওয়ায় মশার দাপট বাড়ছে প্রতিদিন। কিন্ত নির্বিকার স্থানীয় প্রশাসন। এর ফলেই এলাকায় অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত। দিনদিন সেই সংখ্যা বাড়ছে বলেই অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।