এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা

তারা বলছেন, পর্যাপ্ত সহায়তা পেলে এই প্রযুক্তি এডিস মশার বিস্তার রোধে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। গবেষণা ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করে যতো দ্রুত সম্ভব এই প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।

একটি পাত্রে ছটফট করছে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা। সাভারে পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণাগারে ২০০৩ সাল থেকে এ নিয়ে গবেষণা করছেন পরমাণু বিজ্ঞানীরা।

এই ল্যাবেই লার্ভা থেকে পূর্ণবয়স্ক হচ্ছে অজস্র এডিস মশা। এখানে এই মশার সামগ্রিক জীবনচক্রের ওপর নজর রেখে বংশবৃদ্ধি রোধের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা।

মূলত তিনটি ধাপে সম্পন্ন করা হয় প্রক্রিয়াটি। প্রথমে একটি ল্যাবে ডিম থেকে লার্ভা উৎপাদন করা হয়। একদিন বয়স হলে সেগুলো নেয়া হয় দ্বিতীয় ল্যাবে।

২৪-২৬ ঘণ্টা বয়সী এডিস মশা নিয়ে আসা হয় গবেষণাগারে। গবেষণাগারে এনে স্ত্রী এবং পুরুষ মশাগুলোকে আলাদা করা হয়। এরপর পুরুষ মশাগুলোকে নিয়ে যাওয়া হয় রেডিয়েশনের জন্য আলাদা কক্ষে।

এরপরের ধাপে পুরুষ মশাগুলোর ওপর গামা রশ্মি প্রয়োগ করে প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়া হয়। এই পুরুষ মশাগুলো বাইরে ছেড়ে দিলে স্ত্রী মশাগুলোর সাথে মিলিত হওয়ার পর ঐ মশার ডিম থেকে নতুন করে কোনো মশার জন্ম নেবে না।

সাভার পরমাণু গবেষণা প্রতিষ্ঠান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নাহিদা সুলতানা বলেন, ‘গামা রশ্মি প্রয়োগ করে মশার প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়ায় পুরুষ মশাগুলো বাইরে ছেড়ে দিলেও স্ত্রী মশাগুলোর সাথে মিলিত হওয়ার পরও মশার ডিম থেকে নতুন করে কোনো মশার জন্ম নেবে না। এভাবে বংশবিস্তার কমে যাচ্ছে।’

বিষয়টি এখন ল্যাব পর্যায়ে থাকলেও পরবর্তীতে আরো বড় পরিসরে ডেঙ্গু দমনের সুযোগ রয়েছে বলে জানান গবেষকরা।

শনিবার ল্যাবটি পরিদর্শন করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, এই প্রযুক্তি দ্রুত মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে।

প্রয়োজনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের এই গবেষণা কাজ দেশের পরমাণু শক্তি কমিশনের অন্য ল্যাবগুলোতেও শুরু করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর