আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে অযোধ্যা বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি বিতর্কের মীমাংসার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। অতএব আগামী ৬ আগস্ট, মঙ্গলবার থেকে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের কনস্টিটিউশন বেঞ্চে এই মামলার দৈনন্দিন শুনানি শুরু হবে। আজ শুক্রবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এই নির্দেশ দেন।
উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা বাবরি মসজিদ ধূলিসাৎ করে। তাদের দাবি, হিন্দুদের ভগবান রামচন্দ্রর জন্মস্থানে থাকা মন্দির ভেঙে সেই কাঠামোর ওপর ১৫২৮ সালে মুঘল সম্রাট বাবরের সৈন্যরা বাবরি মসজিদ গড়ে তুলেছিল। বিতর্কিত ২ দশমিক ৭৭ একর জমির মালিকানা কার, সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া না ভগবান রামচন্দ্রর (রাম লালা)—শুরু হয় সেই বিবাদ।
২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দেন, বিতর্কিত জমি বিবদমান তিন পক্ষকেই এত তৃতীয়াংশ করে দেওয়া হবে। সেই রায়ের বিরুদ্ধে তিন পক্ষই সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হলে চলতি বছরের ৮ মার্চ সর্বোচ্চ আদালত সবার সঙ্গে কথা বলে শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টায় তিন সদস্যের এক কমিটি গঠন করে দেন। কমিটিতে রাখা হয় সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এফ এম কালিফুল্লা, আধ্যাত্মিক গুরু শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর ও প্রবীণ আইনজীবী শ্রীরাম পঞ্চুকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যস্থতাকারী দলের রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়ে। তাতে বলা হয়, মধ্যস্থতাকারীরা সর্বসম্মতভাবে কোনো সমাধানের খোঁজ পাননি। হিন্দু ও মুসলমান কোনো পক্ষই কোনো সমাধান সূত্রে একমত হননি। বিতর্ক অব্যাহত থাকায় প্রধান বিচারপতি জানান, আগামী মঙ্গলবার থেকে প্রতি দিন শুনানি হবে। সব পক্ষকে শুনানির জন্য তৈরি থাকার নির্দেশও তিনি দেন।
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ–এর অবসর গ্রহণের তারিখ ১৭ নভেম্বর। তিনি চান, এর আগেই এই মামলার নিষ্পত্তি হোক। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর দেশ জুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।
অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি বিতর্কে জমির মালিকানা মামলা সুপ্রিম কোর্টের যে কনস্টিটিউশন বেঞ্চে বিবেচনাধীন তার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। এই বেঞ্চে আর রয়েছেন বিচারপতি এস এ বোরদে, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এস আবদুল নাজির।