বিশ্বকাপ শেষে দুঃস্বপ্নের একটা সিরিজ কাটাল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার কাছে তাদের মাটিতেই হোয়াইটওয়াশ হতে হয়েছে টাইগারদের। হোয়াইটওয়াশের বাংলাদেশি ভার্সন যেহেতু ‘বাংলাওয়াশ’; তো লঙ্কানরা একে নিজেদের মতো করে ‘লঙ্কাওয়াশ’ বানিয়ে ফেলেছে। আজ তৃতীয় ওয়ানডেতে বাজে বোলিং-ফিল্ডিং-ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী করে ১২২ রানে হেরে গেছে তামিম ইকবালের দল। বৃথা গেল ব্যাট হাতে সৌম্য-তাইজুলের লড়াই। দলের ৭ ব্যাটসম্যানই দুই অংক স্পর্শ করতে পারেননি!
রান তাড়ায় নেমে দলীয় ৪ রানে কাসুন রাজিথার বলে পেরেরার গ্লাভসবন্দি হন সর্বশেষ ৬ ইনিংসের সবকটিতেই বোল্ড হওয়া তামিম ইকবাল (২)। তার সঙ্গী এনামুল হক বিজয় প্রথমবার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। রাজিথার দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়েছেন ১৪ রান করে। মি. ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিম আজ আর দলকে ভরসা দিতে পারলেন না। দাসুন শানাকার বলে খোঁচা মেরে ক্যাচ তুলে দেন কুসল মেন্ডিসের হাতে। ৪ রান করে মোহাম্মদ মিঠুন শানাকার দ্বিতীয় শিকার হন।
মাহমুদউল্লাহ (৯) তার তিন নম্বর শিকারে পরিণত হলে ৮৩ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আকিলা ধনাঞ্জয়ার বলে আম্পায়ার সাব্বিরকে এলবিডাব্লিউ ঘোষণা করলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি। জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি সাব্বির। লাহিরু কুমারারার বলে বদলি ফিল্ডার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়েছেন ৭ রান করে। একপ্রান্ত আগলে রাখা সৌম্য সরকার প্রচণ্ড চাপের মাঝে ৬১ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১১তম হাফ সেঞ্চুরি।
সেই লাহিরু-ধনাঞ্জয়া জুটির দ্বিতীয় শিকার হন ৮ রান করা মেহেদী মিরাজ। বাংলাদেশের পরাজয় সময়ের ব্যপার হয়ে দাঁড়ায়। ৮৬ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় ৬৯ রান করা সৌম্যর লড়াইও থামে আকিলা ধনাঞ্জয়ার বলে বোল্ড হয়ে। শফিউল ইসলাম স্টাম্পড হয়ে যান ১ রানে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে রুবেল হোসেন রান-আউটের শিকার হলে ৩৬ ওভারে ১৭২ রানে অল-আউট হয় বাংলাদেশ। ২৮ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন তাইজুল ইসলাম। ১২২ রানের এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে নেয় শ্রীলঙ্কা।
এর আগে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের নির্বিষ বোলিং আর বাজে ফিল্ডিংয়ংয়ের সৌজন্যে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৪ রানের পাহাড় গড়ে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কা। দলীয় ১৩ রানেই প্রথম উইকেট হারিয়েছিল তারা। শফিউল ইসলামের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে যান ৬ রান করা আভিস্কা ফার্নান্দো। ৮৩ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি গড়েন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে আর কুসল পেরেরা।
৪৬ রান করা করুনারত্নেকে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করে জুটি ভাঙেন তাইজুল। কুসলও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। রুবেলের শিকার হয়েছেন ৪২ রানে। ৫৮ বলে ৫৪ কুসল মেন্ডিসকে সাব্বিরের তালুবন্দি করেন সৌম্য সরকার। ৪২তম ওভারের শেষ বলে দুইশ ছাড়ায় শ্রীলঙ্কার স্কোর। ৬৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ।
সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া দাসুন শানাকা ১৪ বলে ৩০ রানের ঝড় তুলে শফিউলের শিকার হন। অন্যপ্রান্তে তিন অংকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। তবে ৮৭ রানে তাকে ফেরান সৌম্য। শেষের দিকে সম্মিলিত চেষ্টায় নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৪ রানের পাহাড় গড়ে শ্রীলঙ্কা। ১০ ওভারে ৬৮ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন শফিউল। ৫৬ রানে তিনটি নিয়েছেন সৌম্য।