বিখ্যাত কার্টুন চরিত্র মিকির সঙ্গী মিনির কণ্ঠটি ছিল তাঁরই। তিন দশক ধরে পর্দার ‘মিনি মাউস’ ছিলেন তিনি। মারা গেছেন সেই রুসি টেলর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। ডিজ়নির পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান বব ইগার বিবৃতিতে জানিয়েছেন, রুসি টেলরের মৃত্যুতে মিনি মাউস তার কণ্ঠ হারাল।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের গ্লেনডেলে বাস করতেন রুসি টেলর। গত শুক্রবার নিজের বাড়িতেই মৃত্যু হয় তাঁর। তবে মৃত্যুর কারণ জানাননি ডিজ়নি কর্তৃপক্ষ।
বব ইগার বিবৃতিতে বলেছেন, তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে মিনি আর রুসি একসঙ্গে কাজ করেছেন। সারাবিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষকে বিনোদন জুগিয়েছেন তিনি। আমরা বিশ্বাস করি, রুসির কাজ ভবিষ্যতেও মানুষকে বিনোদন জোগাবে। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে প্রেরণা হয়ে থাকবেন তিনি।
রুসি টেলর ১৯৪৪ সালের ৪ মে ম্যাসাচুসেটসে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৬ সালে ডিজ়নির একটি অডিশনে প্রায় ২০০ জনের মধ্যে তাঁকে বেছে নেওয়া হয় মিনির হয়ে কথা বলার জন্য। তারপর থেকে এতদিন মিকি-মিনির ভক্তরা তাঁর গলাই শুনে এসেছেন। একবার এক সাক্ষাৎকারে রুসি জানিয়েছিলেন ওয়াল্ট ডিজ়নির সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয়ের কথা। তাঁর মিনি মাউস হয়ে ওঠার গল্প।
ডিজ়নিল্যান্ডে যাওয়ার পর ওয়াল্ট ডিজ়নির সঙ্গে দেখা হয়েছিল রুসির। তখন তিনি বালিকা। ওয়াল্ট ডিজ়নিকে তখন রুসি জানিয়েছিলেন, বড় হয়ে তাঁরই সৃষ্ট কোনও কার্টুন চরিত্রের হয়ে কাজ করতে আগ্রহী তিনি। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে মিনির চরিত্রের জন্য অডিশনের সুযোগ আসে। বাকিটা ইতিহাস। শুধু মিনি-ই নয়। পেবলস ফ্লিনস্টোন, স্ট্রবেরি শর্টকেক-এর মতো কার্টুন চরিত্রের হয়েও কণ্ঠ দিয়েছেন রুসি। কাজ করেছেন ডাক টেলস সিরিজে। রুসি বলেছিলেন, আমি কখনও বিখ্যাত হতে চাইনি। যে চরিত্রের হয়ে কাজ করছি, জানতাম সেটি বিখ্যাত। আমি সেটাকেই মেনে নিয়েছি।
আশির দশকের মাঝামাঝি সময়েই বাস্তব আর পর্দার মিকি মাউসের সঙ্গে দেখা হয় মিনির। ওয়েন অলউইন-১৯৭৭ সাল থেকে মিকি মাউসের জন্য কণ্ঠ দিয়ে এসেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনিই ছিলেন ‘মিকি মাউস’। তাঁর আগে মিকির হয়ে গলা দিয়েছিলেন আরও দু’জন। রুসির সঙ্গে ওয়েনের সাক্ষাতের পরেই জমে উঠেছিল প্রেম। ১৯৯১ সালে রুসি আর ওয়েন বিয়ে করেন। তবে বিয়েটা খুব গোপনেই সেরেছিলেন ‘মিকি’ আর ‘মিনি’।
রুসি জানান, মিকি আর মিনি যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ, গোটা বিশ্ব সেটা জানুক, তা চাননি তাঁরা। তবে এক কথায় সুখি দম্পতির উদাহরণ ছিলেন তাঁরা।
রুসির কথায়, আমরা একসঙ্গে সবচেয়ে ভালো মুহূর্তগুলো কাটিয়েছি। একসঙ্গে হেসেছি; প্রচুর গান শুনেছি। সারাক্ষণ আমাদের বাড়িতে কিছু না কিছু বাজত।