জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ নেতৃত্বের ব্যর্থতায় ভুগছে এবং একে এখন ‘ক্লান্ত, পিছিয়ে পড়া এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দিনে দিনে অক্ষমতর’ বলে মনে হচ্ছে। লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন মন্তব্য করেছে।
সম্প্রতি আরব বিশ্বে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টিকারী গণঅভ্যুত্থানের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া এবং বিশেষ করে সিরিয়ার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ায় বিরোধীদের ওপর প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের দমন পীড়ন বন্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ব্যর্থ হয়েছে। আর এসব ব্যর্থতার কারণেই প্রতিষ্ঠানটিকে এখন বিশ্বশান্তির অভিভাবক হিসেবে ‘অনাবশ্যক’ বলেই মনে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে অ্যামনেস্টির মহাসচিব সলিল শেঠী বলেন, ‘সিরিয়া পরিস্থিতি যে অবস্থায় তাতে এটা পরিষ্কার যে, তা তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নেওয়া অনেকটা বাধ্যতামূলক।’ চীন ও রাশিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের কিছু সদস্য যেকোনো মূল্যে সিরিয়াকে রক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে করে সংঘটিত অপরাধের জন্য বাশার সরকারের জবাবদিহীতা আর বাধ্যতামূলক থাকল না। আর এটা সিরীয় জনগণের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা বলে উল্লেখ করছেন সলিল শেঠী।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদরে পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের মধ্যে দুটি হলো চীন ও রাশিয়া। সিরিয়ার ব্যাপারে জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রস্তাবে দু’বার ভেটো দিয়েছে দেশ দু’টি। মস্কোর মতে, উত্থাপিত প্রস্তাব সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রতি পক্ষপাতমূলক।
উল্লেখ্য, সিরিয়াতে গত বছরের মার্চে শুরু হওয়া সরকার বিরোধী বিক্ষোভ সহিংসতায় এ যাবত ১০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলে জাতিসংঘের দাবি।
কিন্তু সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকারের দাবি, তারা কিছু সশস্ত্র গ্যাং যারা আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি ২০১২ সালের বিশ্বে অস্ত্র বাণিজ্যের প্রতিবেদনেটির উল্লেখ করে সারা বিশ্বে অস্ত্র আমদানি রপ্তানিকারক রাষ্ট্রগুলোকে আগামী জুলাইয়ে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করারও আহ্বান জানিয়েছে।