ভারতে ভয়াবহ বন্যায় প্রাণহানির সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে। বিহার ও আসামের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দেশটির এক কোটির বেশি মানুষ। আকস্মিক বন্যায় খাদ্য ও নিরাপদ পানি সংকটের পাশাপাশি চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন রাজ্য দুটির বাসিন্দারা। এদিকে, নেপালে বন্যা পরিস্থিরি এখনও উন্নতি হয়নি।
মৌসুমী বৃষ্টিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত বিহারের অধিকাংশ জেলার মানুষের জনজীবন। চলমান বন্যার মধ্যেই টানা বৃষ্টিতে বেড়েছে নদ নদীর পানি। বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি ডুবে যাওয়ায় চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে রাজ্যটির বাসিন্দারা। খাদ্য ও বিরাপদ পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। পানিবন্দি অর্ধ কোটির বেশি মানুষ। অস্থায়ী কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন আরো প্রায় এক লাখের বেশি বাসিন্দা।
একজন বলেন, পানিতে সব তলিয়ে গেছে। আমরা এখানে পানিবন্দি হয়ে আছি। এরমধ্যেই আমরা খাওয়া দাওয়া করি, এখানেই ঘুমাই।
আরেকজন বলেন, আমাদের সব কিছু রাস্তায় রেখে এসেছি। আমরা একটা প্লাস্টিকের ব্যাগও পাইনি। এখানকার কেউ পায়নি।
বানভাসী মানুষের সহায়তায় এক হাজারের বেশি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হলেও বিপুল সংখ্যক মানুষের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ত্রাণ সহায়তায় নিয়োগ করা হয়েছে আরো প্রায় এক হাজার কর্মী।
রাবিশ কুমার বলেন, বর্ষাকালে নেপাল ও ভারতের মানুষের জনজীবন একসঙ্গে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
একই পরিস্থিতি আসামেও। ব্রহ্মপুত্রসহ নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় রাজ্যটির ৩৩ জেলার মধ্যে ২৮টি জেলা বন্যা কবলিত। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৫৫ লাখের বেশি মানুষ।
নেপালেও বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। বন্যার পানিতে নিখোঁজদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারে মোতায়েন করা হয়েছে ৪০ হাজার নিরাপত্তা কর্মী। হেলিকপ্টারে করে দুর্যোগ কবলিত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন তারা।
এদিকে, অব্যাহত ভারী বৃষ্টিতে চীনের শানজি, গুয়াংজি, সিচুয়ানসহ বেশ কয়েকটি প্রদেশের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। অনেক গ্রাম প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি তলিয়ে গেছে ৬৫ হাজার হেক্টরের বেশি ফসলি জমি। নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে ২১ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে।