বাংলাদেশ সরকার ধর্মীয় বহুবাদ বিকাশ ও সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার পাশাপাশি অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে উগ্রবাদ প্রতিরোধ করে চলেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে আয়োজিত মন্ত্রী পর্যায়ে ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক এক সম্মেলনে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। শুক্রবার (১৯ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার ধর্মীয় বহুবাদ বিকাশ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের সহিংসতা, উগ্রবাদ, বিভেদ মোকাবিলায় সরকার সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়তে স্লোগান এনেছেন, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’। এ স্লোগানের মাধ্যমে আমরা দেশের সাধারণ মানুষকে সব ধর্মের প্রতি সমানভাবে শ্রদ্ধা প্রদর্শনে উদ্বুদ্ধ করে চলেছি।
মিয়ানমারের দমন-পীড়নে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অবস্থা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার শেষ হওয়া তিন দিনের এ সম্মেলনে ১০৬টি দেশের প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন। এতে ৪০টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অংশ নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে বুধবার হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভয়ংকর এক মিথ্যা তথ্য দেন বাংলাদেশি এক নারী।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার বিভিন্ন ধর্মের ২৭ জন মানুষকে ডেকেছিলেন তাদের দুর্ভোগের কথা শোনার জন্য। সেখানে মিয়ানমার, নিউজিল্যান্ড, ইয়েমেন, চীন, কিউবা, ইরিত্রিয়া, নাইজেরিয়া, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, সুদান, আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান জার্মানি, বাংলাদেশ সহ আরো কয়েকটি দেশের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
তাদের প্রত্যেকেই ট্রাম্পকে তাদের নিজ দেশের দুর্ভোগের কথা বলছিলেন। সেখানেই বাংলাদেশ থেকে যাওয়া নারী ট্রাম্পকে বলেন, তার জমি-জমা কেড়ে নিয়েছে বাংলাদেশি মুসলিমরা, তার ঘরবাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তাই তিনি ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন।
ওভাল অফিসে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে সেই নারী ট্রাম্পকে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। সেখানে ৩৭ মিলিয়ন (৩ কোটি ৭০ লাখ) হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানকে গুম করা হয়েছে। এখনো সেখানে ১৮ মিলিয়ন (১ কোটি ৮০ লাখ) সংখ্যালঘু জনগণ রয়েছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ত্যাগ করতে চাই না। আমি আমার ঘর হারিয়েছি, আমার জমি নিয়ে নিয়েছে, আমার ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে কিন্তু সেসবের কোনো বিচার নেই।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প জিজ্ঞেস করেন কারা এসব করছে? বাংলাদেশি ওই নারী বলেন, ‘সবসময় উগ্রবাদী মুসলিমরা এই কাজ করছে। সবসময় তারা রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে এই কাজ করে।’