মরুভূমিতে মা বিয়ন্সের হাত ধরল ব্লু!

মরুভূমিতে মা বিয়ন্সের হাত ধরল ব্লু!

‘স্পিরিট! ওয়াচ দ্য হেভেন ওপেন…’, ‘স্পিরিট’ গানটি ব্যবহার করা হয়েছে ডিজনির ‘লাইভ অ্যাকশন’ রিমেক, ‘দ্য লায়ন কিং’ (২০১৯) ছবিতে। হ্যাঁ, যে ছবির হিন্দি ভার্সনে কণ্ঠ দিয়েছেন শাহরুখ খান আর তাঁর ছেলে আরিয়ান খান। এই ছবির এই গানের ভিডিওতে চমক হয়ে মা বিয়ন্সে নোয়েলসের সঙ্গে দেখা গেছে তাঁর ৭ বছর বয়সী মেয়ে ব্লু আইভিকে।

‘পিপল’ ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সৃষ্টিকর্তাই সবচেয়ে বড় শিল্পী—‘স্পিরিট’ গানের এটাই মূল বার্তা। এই গানের শুটিং হয়েছে বন, জঙ্গলে আর মরুভূমিতে। সিংহ, জিরাফ আর স্টুডিওর ভেতরে অ্যানিমেশনে তৈরি অসংখ্য প্রাণীকে দেখা যায় এই গানের ভিডিওতে। কিন্তু এই গানের মূল তারকা নন মার্কিন সংগীতশিল্পী বিয়ন্সে নোয়েলস, ওই প্রাণীরাও না। এই গানের মূল আকর্ষণ বিয়ন্সে নোয়েলসের মেয়ে ব্লু আইভি।

মা বিয়ন্সে নোয়েলসের তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় ব্লু আইভি। কিন্তু আইভিরও বড় বোন বা ভাই থাকতে পারত। ২০১০ সালের শেষ দিকে বা ২০১১ সালের প্রথম দিকে দুর্ঘটনাবশত গর্ভপাত হয় বিয়ন্সের। সেই ঘটনাকে বিয়ন্সে উল্লেখ করেছেন তাঁর জীবনের সবচেয়ে দুঃখজনক অধ্যায় বলে। এই ঘটনার পর ভেঙে পড়েন বিয়ন্সে। শোককে শক্তি করে, গান লিখে, গান গেয়ে আবার উঠে দাঁড়ান। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে প্যারিসে যান বিয়ন্সে আর তাঁর স্বামী জে-জেড। ‘ফোর’ অ্যালবামের কভার ফটোশুট করেন সেখানে। প্যারিসে অপ্রত্যাশিতভাবে গর্ভবতী হয়ে পড়েন তিনি।

এর চার মাসের পরের ঘটনা। ২০১১ সালের আগস্টে তিনি এমটিভি মিউজিক অ্যাওয়ার্ডের জন্য ‘লাভ অন দ্য টপ’ গানে পারফর্ম করেন। গান শেষে ঘোষণা দেন, ‘আই অ্যাম প্রেগন্যান্ট।’ তাঁর এই ঘোষণার জন্য ওই প্রোগ্রাম এখন পর্যন্ত অনলাইনে এমটিভির ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংখ্যকবার দেখা হয়। আর এই ঘোষণা স্থান পায় গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে, ‘যে অনুষ্ঠান নিয়ে প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ সংখ্যকবার টুইট করা হয়েছে’ এই ক্যাটাগরিতে। বিয়ন্সের এই ঘোষণা প্রতি সেকেন্ডে ৮ হাজার ৮৬৮টি টুইটের জন্ম দেয়। আর ২০১১ সালের আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশি গুগল করা শব্দ ‘বিয়ন্সে প্রেগন্যান্ট!’

জন্মের আগেই এতসব ঘটনা ঘটিয়ে অবশেষে ২০১২ সালের ৭ জানুয়ারি জন্ম নেয় ব্লু আইভি। আর তাঁকে বড় বোন বানিয়ে ২০১৭ সালের ১৩ জুন তারিখে জন্ম নেয় রুমি ও স্যার কার্টার নামে যমজ এক বোন ও এক ভাই। অনেকে বলে, ব্লু নাকি দেখতে হয়েছে বাবার মতো। কিন্তু চোখটা পেয়েছে মায়ের। অনেকবার রেড কার্পেটে তাঁকে দেখা গেছে মায়ের সঙ্গে মিলিয়ে পোশাক পরে হাঁটতে। আর এবার দেখা গেল মায়ের গাওয়া ‘স্পিরিট’ গানের ভিডিওতে। এই গানে সব রং আর ঐতিহ্যের সৌন্দর্যকে উদযাপন করা হয়েছে। এই গানে গাওয়া হয়েছে, ‘কালো সুন্দর’।

এক মিনিটেরও কম সময়ের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মরুভূমির মাঝে বিয়ন্সে একা বসে আছেন। হঠাৎ দেখা গেল গোলাপি রঙের পোশাকে এগিয়ে আসে ৭ বছর বয়সী ব্লু। ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয় তাঁর চেহারা। আর এসেই একাকী মায়ের হাত ধরে সে। যেন কিছু না বলেই বলল, ‘এই যে, আমি তোমার পাশে আছি মা।’ আর বেজে চলল ‘স্পিরিট! ওয়াচ দ্য হেভেন ওপেন।’

এই দৃশ্য যেন প্রতীকী, যেন বাস্তবতারই প্রতিফলন। যেভাবে বিয়ন্সের মরুভূমির মতো একাকিত্ব ঘুচিয়ে জন্ম নিয়েছিল ব্লু, সেটিই যেন দেখানো হলো একটু অন্যভাবে।

রাত পোহালেই যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পাবে ‘দ্য লায়ন কিং’। হিন্দি ভাষায় যেমন শোনা যাবে বলিউডের বাবা আর ছেলেকে, ইংরেজি ভার্সনে তেমন দেখা যাবে হলিউডের মা আর মেয়েকে।

বাংলাদেশ বিনোদন