সড়ক দুর্ঘটনায় কাটা পড়েছে হাতের আঙুল। সেই আঙুল নিয়ে নীলোৎপল চক্রবর্তী দেড় ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে যান কলকাতার একটি নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে।
সেখানে তাকে বলা হয়, পর দিন সকালে অস্ত্রোপচার করা হবে। জুড়ে দেয়া হবে কাটা আঙুল। কিন্তু অস্ত্রোপচারের সময় দেখা গেল কাটা আঙুল আর পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও পাওয়া যায়নি সেই আঙুল। শেষাবধি কাটা আঙুল খুঁজে পেতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে রোগীর পরিবার।
গতকাল বুধবার দুপুরে হাওড়ার ফোরশোর রোড দিয়ে মোটর সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন হাওড়ার আন্দুলের বাসিন্দা নীলোৎপল। ৩৫ বছর বয়সী নীলোৎপল পেশায় কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। রং প্রস্তুতকারী একটি বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত আছেন।
তার চাচা দীপকরঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, বুধবার মোটর সাইকেল নিয়ে পড়ে গিয়ে সম্ভবত ক্লাচের ফাঁকে আটকে থেঁতলে কেটে গিয়েছিল নীলোৎপলের বাম হাতের মধ্যমা।
তিনি আরো বলেন, নীলোৎপল নিজেই সেই আঙুল কুড়িয়ে কাগজে মুড়ে নিয়ে চলে যান হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানকার এক প্লাস্টিক সার্জন তাকে পরামর্শ দেন, একবালপুরে ডায়মন্ড হারবার রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে যেতে। চিকিৎসক নিজে ওই হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত।
হাওড়ার হাসপাতাল থেকেই নিয়ম মেনে কাটা আঙুল বরফ দিয়ে মুড়ে দেয়া হয়। সেই কাটা আঙুল নিয়ে বুধবার বিকেল ৪টা নাগাদ কলকাতার ওই হাসপাতালে ভর্তি হন নীলোৎপল।
দীপকবাবু বলেন, ভর্তির পর ওই চিকিৎসক জানান যে, তিনি খুব ক্লান্ত। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যেহেতু কাটা অঙ্গ জুড়তে হয়, তাই তিনি ঠিক করেন বৃহস্পতিবার সকালে অস্ত্রোপচার করবেন।
সে অনুযায়ী আজ সকাল ৮টা নাগাদ অপারেশন থিয়েটারেও নিয়ে যাওয়া হয় রোগীকে। আর তখনই ধরা পড়ে কাটা আঙুল নেই!
দীপকবাবুর অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হয়। তার পরেও খোঁজ মেলেনি ওই আঙুলের।
আজ দুপুর ২টা পর্যন্ত আঙুলের খোঁজ না পাওয়ার পর চিকিৎসক জানিয়ে দেন, এর পর আঙুল পেলেও জোড়া লাগানো যাবে না। তার পরই রোগীর পরিবার যান আলিপুর থানায়। সেখানে তারা ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তের পরই বোঝা যাবে, বিষয়টি আসলে কী আর কারইবা দোষ। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।