সহপাঠীর ভিডিও গেম ‘ব্যবহার’ করা নিয়ে ১২ বছরের কিশোরকে স্কুলে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে। তারপর সন্ধ্যায় তার নিথর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কানাডার টরন্টোর সরকারি একটি স্কুলে সিক্সথ গ্রেডের সেই বাঙালি ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে রহস্য ঘনিয়েছে।
গত ২১ জুন একটি বহুতলের ছাদে উঠতে দেখা যায় ছেলেটিকে। উঁচু থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয় বলে পুলিশের ধারণা। কিন্তু কখন, কীভাবে ঘটল সেটা স্পষ্ট নয়।
ছেলেটির মা-বাবা ভারতের কলকাতার বাসিন্দা। তারা বিবাহ-বিচ্ছিন্ন। মা টরন্টোতে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী আর বাবা চেন্নাইয়ের পরমাণু বিজ্ঞানী। ছেলের মৃত্যু রহস্য-ভেদে মা এখন টরন্টোতে পুলিশ থেকে স্কুল বোর্ড কর্তৃপক্ষের দরজায় দরজায় ঘুরছেন। ভারতীয় কনসুলেটের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
বিভিন্ন সমীক্ষা বলছে, কানাডায় পাঁচজনের মধ্যে একজন স্কুল শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করতে ইচ্ছুক। ছোটদের মানসিক সমস্যার বহর এক দশকে ৬৬ শতাংশ বেড়েছে। বাঙালি ওই শিক্ষার্থীর অপমৃত্যু নিয়ে টরন্টো পুলিশের ৫৩ ডিভিশন থানায় ফোন করলে তারা বলেন, তদন্ত শেষ না হলে কিছু বলা যাবে না।
ক্লাসে সে সব থেকে চটপটে, বুদ্ধিমান ছিল বলে স্মরণসভায় জানান শিক্ষকরা। কিন্তু ছোট্ট ওই ছেলে কয়েকজন সহপাঠীর ‘নিগ্রহে’র শিকার হচ্ছিল বলে মা পুলিশকে জানিয়েছেন।
কিশোরের মা বলেন, স্কুল বোর্ডের কাউন্সিলর ওকে সাহস জোগাচ্ছিলেন। কিন্তু মৃত্যুর কয়েকদিন আগেও এক সহপাঠী আমার ছেলেকে মারে। এর পর সহপাঠীর ভিডিও গেম বাড়িতে নিয়ে এসে খেলার অভিযোগে জটিলতা তৈরি হয়। সে নিজে সেটা নেয়নি প্রাণপণে বোঝাতে চায় ছেলেটি।
তার মা বলেন, দুপুরে স্কুল থেকে ছেলের ভিডিও গেম খেলা নিয়ে ফোন আসে। বাড়ি ফিরে ছেলে জানায়, স্কুলে সবার সামনে তার ব্যাগ-লকার তল্লাশি হয়েছে। অপবাদ মিথ্যা প্রমাণ করতে ছেলেটা অস্থির হয়ে ওঠে।
প্রতিবেশী এক সহপাঠীকে ডাকার কথা বলে হঠাৎ বেরিয়ে যায় সেই ছেলে। পরে তার মরদেহ মেলে। বাড়িতে ছেলেটির একটি খাতাও পুলিশ পেয়েছে। তাতে স্কুলে জনপ্রিয় না-হতে পারার গ্লানির কথা লেখা আছে! লেখাটা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।