ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে দেশে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশের আইন দ্বারা এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিচালিত না হওয়ায় এই সমস্যার মুখোমুখী। ডিজিটাল নিরাপত্তা শুধু দেশে নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি দাবি করেছেন।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরো জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো পরিচালিত হয় আমেরিকার সামাজিক ও পারিবারিক আইন দ্বারা। আমেরিকার হস্তক্ষেপে চলে। আমাদের দেশে সেগুলোর কোনো অফিস নাই। প্রশ্ন উঠেছে, সেগুলোতে আমাদের সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারে কিনা?
একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সাইবার সমস্যা কেবলমাত্র বাংলাদেশের বিষয় নয়, সমগ্র বিশ্বের বিষয়। ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য গত বছর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ পাস হয়েছে। এই আইনের আওতায় একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি গঠন করা হয়েছে। এই এজেন্সির মাধ্যমে নোংরা ও অশ্লিল ২২ হাজার পর্ন সাইট বন্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েক হাজার সাইট অপসারণ করা হয়েছে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, দেশে বর্তমানে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ৯ কোটি ৪৪ লাখ। তবে দেশে ইন্টারনেটের দাম কমেনি এমন তথ্য সঠিক না। বরং দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেটের দামও উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা হয়েছে। ইন্টারনেটের সরকার নির্ধারিত মূল্য প্রতি মেগাবাইট এক টাকা।
একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০০৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেটের গ্রাহক সংখ্যা ছিল মাত্র ৬০ লাখ, যা বেড়ে ২০১৯ সালের মে পর্যন্ত ৯ কোটি ৪৪ লাখ হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি খাতে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসাবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) অত্যন্ত সুলভ মূল্যে ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইথ চার্জ বিভিন্ন সময়ে ধাপে ধাপে কমানো হয়েছে। প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডউউথ চার্জ ২০১৮ সালে ছিল ২৭ হাজার, যা বর্তমানে সর্বনিম্ন ১৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রীয় মোবাইল অপারেটর টেলিটক ইন্টারনেট সেবার মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করেছে। ২০১৮ সালে যেখানে এক জিবি ইন্টারনেটের সেবা মূল্য ছিল ২২১ টাকা, তা বর্তমানে কমিয়ে সর্বসাধারণের জন্য ৪৬ টাকা এবং ছাত্রদের জন্য ৪৩ টাকা (৩০ দিন মেয়াদী) নির্ধারণ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেটের সরকার নির্ধারিত মূল্য হলো প্রতি মেগাবাইট এক টাকা। বর্তমানে এই মূল্যের কমেই প্রতিষ্ঠানসমূহ ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে থাকে। বর্তমানে ইন্টারনেট এর মূল্য পুনর্বিবেচনার জন্য বিটিআরসি হতে ডাটা কস্ট মডেলিং এর কাজ চলমান রয়েছে।
তিনি জানান, মানসম্মত ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করার জন্য বিটিআরসি নিয়মিত ড্রাইভ টেস্ট পরিচালনা করে। তাছাড়া এমএনপি সুবিধা টাওয়ার শেয়ারিং সুবিধা এবং ৪জি চালু করা হয়েছে। একই সঙ্গে সেবার মান মনিটরিং করা হচ্ছে এবং সকল অপারেটরকে সেবার মান উন্নত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।