ভারতের ‘পশ্চিমবঙ্গ’ প্রদেশের নাম বদলে ‘বাংলা’ রাখার প্রস্তাব আবারও নাকচ করে দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রতিবেশী বাংলাদেশের নামের প্রথম অংশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের নতুন নাম মিলে যাওয়ায় তা বাতিল করা হয়েছে।
বুধবার সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বের সময় এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায়। রাজ্যের নাম ‘পশ্চিমবঙ্গ’ বদলে ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুমোদন করছে না বলে জানান এই মন্ত্রী। সংসদে এই তথ্য জানার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম বদলের এ প্রস্তাব আবারো কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোর আভাস দিয়েছেন তিনি।
এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবরে পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলের প্রস্তাব গৃহীত হয় বিধানসভায়। রাজ্যের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে নতুন নাম রাখার বিষয়ে সম্মতি জানায়। বঙ্গ, বেঙ্গল ও বঙ্গাল নামে বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দি ৩টি ভাষায় তিনটি নাম বাছাই হয় সেসময়। কিন্তু রাজ্যের নাম বদলের সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, পৃথক পৃথক নাম নয় বরং তিনটি ভাষায়ই এক নাম হতে হবে। তবেই নাম বদল করা যাবে। এর পরপরই রাজ্য সরকার রাজ্যের নাম তিন ভাষায়ই ‘বাংলা’ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
সর্বসম্মতির ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে নাম বদলের সেই প্রস্তাব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠিায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কিন্তু রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়নি কেন্দ্র। এ নিয়ে তিনবার রাজ্যের নাম বদলের প্রস্তাব নাকচ করলো নয়াদিল্লি।
পশ্চিমবঙ্গের নাম পাল্টে ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব নাকচ করে দেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবেশী বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বুধবার রাজ্যসভায় রাজ্যের নাম বদলের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চান সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, রাজ্যের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। সেখানেও নামে ‘বাংলা’ রয়েছে। ফলে এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে। তবে কেন্দ্রের এই যুক্তি মানা হবে না বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশের উদাহরণ তুলে ধরে পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার।
তৃণমূল সরকারের যুক্তি, পাকিস্তানেও ‘পাঞ্জাব’ নামে একটি প্রদেশ রয়েছে। অন্যদিকে ভারতেও ‘পাঞ্জাব’ নামে রাজ্য রয়েছে। এতে যদি কোনো সমস্যা না হয়; তাহলে পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে ‘বাংলা’ রাখায় সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা অযৌক্তিক। কারণ, প্রতিবেশী দেশের পুরো নাম বাংলাদেশ।