চীনের গৃহীত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে (বিআরআই) কেন্দ্র করে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে নানা সন্দেহ থাকলেও এ মহাপ্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে মধ্য ইউরোপের দেশ সুইজারল্যান্ড। চলতি মাসে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট ও অর্থমন্ত্রী উয়েলি মোরার চীন সফরের সময় চীনের সঙ্গে এ-বিষয়ক একটি চুক্তিতে সই করবেন। আগামী সপ্তাহেই এ সফর হওয়ার কথা রয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, চীনে আগামী সপ্তাহে দ্বিতীয় বিআরআই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রায় ৪০টি দেশের নেতারা অংশ নেবেন। এ সম্মেলনে যোগ দিতেই চীন সফর করবেন উয়েলি মোরার। প্রথম বিআরআই সম্মেলনের দুই বছরের মাথায় অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হতে পারে। সুইজারল্যান্ডের যুক্ত হওয়াটা এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ঘোষিত নয়া সিল্ক রোড প্রকল্প নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা রয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এই প্রকল্পকে আন্তর্জাতিক পরিসরে চীনের প্রভাব বিস্তারের কৌশল হিসেবে বিবেচনা করে। এ ছাড়া এর সঙ্গে যুক্ত দেশগুলোকে চীন ঋণজালে আবদ্ধ করে ফেলছে বলেও সমালোচনা রয়েছে। যদিও চীন এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। কিন্তু এই সংশয় ও চীনের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ওপর বাড়তি শুল্কারোপের মধ্য দিয়ে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করে। চীনকে চাপে রাখতেই এই কৌশল নেয় ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের মধ্যেও ইতালি চীনের এ পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। রয়টার্স জানায়, শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭-এর অন্তর্ভুক্ত প্রথম দেশ হিসেবে ইতালি বিআরআই প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে ওয়াশিংটন রুষ্ট হয়। এ বিষয়ে ইউরোপের অন্য দেশগুলো অনেকটা নিস্পৃহ। যদিও কোনো কোনো দেশ এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি খোলামনে ভাবতে রাজি আছে। এর মধ্যে অন্যতম সুইজারল্যান্ড।
সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট উয়েলি মোরার এ মাসেই চীন সফরে আসছেন। এ সফরের সময় বিআরআই প্রকল্পে যুক্ত হতে একটি চুক্তিতে সই করবেন তিনি। সুইজারল্যান্ড এই প্রকল্পকে বিশেষত মধ্য এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করার অংশ হিসেবে দেখছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিআরআইয়ের আওতাভুক্ত তৃতীয় কোনো অঞ্চলে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রকল্প অর্থায়নের মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে সহযোগিতার পরিসর জোরদারই এ চুক্তির মূল লক্ষ্য।’