দখলকৃত ফিলিস্তিনি শহরের ঐতিহাসিক একটি মসজিদকে নাইট ক্লাবে ও মদের আড্ডা খানায় রূপান্তর করেছে ইসরায়েল। সেখানে এখন পার্টি হয়, চলে মদ্যপান। রাতে গানের তালে নাচতে দেখা যায় তরুণ তরুণী থেকে সব বয়সী মানুষকে। মাঝে মাঝে বিয়ের অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হয়।
ইহুদিবাদী ইসরায়েলের দখলকৃত উত্তর ফিলিস্তিনের সাফাদ নগরে অবস্থিত ত্রয়োদশ শতাব্দীর ওই মসজিদটির নাম আল-আহমার (লাল মসজিদ)। দখলদার ইসরায়েলি নগর কর্তৃপক্ষ এই কাজটি করেছে।
খাইর তাবারি নামের এক স্থানীয় ইসলামি সংস্থার কর্মী বলেন, ‘আমি যখন ব্যাপারটি প্রথমবার দেখতে পাই তখন তো বেশ মর্মাহত হয়ে পড়ি। মসজিদটির ভেতরে এমন কার্যক্রম লক্ষ্য করার পর আমি অন্তর্ঘাতে ভুগতে থাকি।’
কয়েক বছর আগে এ নিয়ে নাজারেথ আদালতে মসজিদটির হস্তান্তর চেয়ে একটি আবেদন করেন তিনি। তাবারি বলছেন, তিনি মসজিদটির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্রও উত্থাপন করেন। কিন্তু এখনো আদালত এ বিষয়ে কোনো রুল জারি করেননি।
বেশ কয়েকবার হামালার শিকার হয় মসজিদটি। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলিরা ওই এলাকার দখল নিলে মসজিদটিও মুসলমানদের হাতছাড়া হয়। তারপর থেকে নানাভাবে ব্যবহার হতে থাকে সেটি। সেখানে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ।
প্রথমে এটিকে ইহুদি যাজকদের একটি প্রশিক্ষণ কলেজ হিসেবে রুপান্তর করা হয়। তারপর ২০০৬ সালে ইসরায়েলের কাদিমা পার্টির নির্বাচনী কার্যালয় বানানো হয় মসজিদিটিকে।
মুস্তাফা আব্বাস নামের স্থানীয় এক ঐতিহাসিক বলেন, ‘আল আহমার মসজিদের লাল পাথরে লেখা মসজিদের নামটিও মুছে গেছে। আজকাল এখানে সবই হয় শুধু মুসলিমদের নামাজ আদায় করা বাদে। মুসলিমরা মসজিদটিতে গেলে ইহুদিদের আক্রমণের শিকার হন।’
মুস্তাফা আব্বাস নামের ওই ঐতিহাসিক আরও বলেন, ‘মসজিদটির দূর্লভ ঐতিহাসিক ও স্থাপত্য মূল্য রয়েছে। এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মামলুক সাম্রাজ্যের সুলতান আল দাহের বাইবারসের শাসনামলে। মসজিদটির সামনে থাকা নামফলক বলছে এটি ১২৭৬ খ্রীস্টাব্দে নির্মিত।
সূত্র: গালফ নিউজ, মিডল ইস্ট মনিটর