প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমগ্র দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধভাবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের সকল কর্মের মধ্যদিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণ করে যাবো। বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেখেছিলেন।
‘আর সেই বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমি সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানাচ্ছি,’ যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রবিবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে দল এবং বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে একথা বলেন।
বাংলা নববর্ষ সবার জীবনকে সুন্দর এবং উদ্ভাসিত করে তুলবে এবং বাংলাদেশে তাঁর সরকারের নেতৃত্বে চলমান উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে বলেও প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, বাংলা নতুন বছর-১৪২৬ এর নতুন সূর্য সবার জীবনকে সুন্দর করুক, উদ্ভাসিত করুক, সফল করুক সেটাই আমি কামনা করি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি এটুকুই আশা করবো যে, আমাদের যে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে সেই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। বিশ্ব দরবারে বাঙালি জাতি সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে চলবে। বিশ্বে বাংলাদেশ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলা নববর্ষ, পুরাতন বছরকে পেছনে ফেলে আমরা নতুন বছরে পদার্পন করছি। সমগ্র বাঙালি জাতিকে এই নববর্ষে আমি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। শুভ নববর্ষ।
নতুন বছর বাঙালি জাতির জন্য নতুন বার্তা বয়ে আনুক, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন করবো, আমরা আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবো।
যখন বাংলাদেশে হতদরিদ্র বলে কিছু থাকবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করায় দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীসহ সমগ্র দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
তিনি বলেন, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সহযোগী সংগঠনের সকল নেতা-কর্মীকে আমি বিশেষভাবে শুভেচ্ছা জানাই, শুভেচ্ছা জানাই গত নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে জাতির সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন তাদেরকে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। আজকে আমাদের লক্ষ্য জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। আমরা তা করতে পারবো।
তিনি এ সময় পুনরায় দেশে এবং প্রবাসে অবস্থানকারী সকল বাঙালিকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।
বক্তব্যের শুরুতেই শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, চার জাতীয় নেতা, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং সম্ভ্রমহারা দুই লাখ মা-বোনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
সংসদের উপনেতা এবং দলের জ্যেষ্ঠ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমাম, আমির হোসেন আমু এবং তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম এবং এডভোকেট সাহারা খাতুন অন্যান্যের মধ্যে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কন্যা এবং বিশ্ব অটিজম আন্দোলনের অগ্রপথিক সায়মা ওয়াজেদ হোসেন এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থল গণভবনের ব্যাংকোয়েট হলে প্রবেশ করলে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের শিল্পীবৃন্দ বিখ্যাত রবীন্দ্র সঙ্গীত এবং বর্ষবরণের গান ‘এসো হে বৈশাখ’ এবং ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’ পরিবেশন করেন।
পরে, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ এবং সভাপতিমন্ডলীসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনাকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের বিভিন্ন বাঙ্গালি খাবার যেমন- মোয়া, মুড়কি, মুরলি, কদমা, এবং জিলেপি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।