রাশিয়ার উপ-পরাষ্ট্রমন্ত্রী সারগেই রিয়াবকোভ বলেছেন, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ভাবছে কয়েকটি পশ্চিমা দেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড স্টেটের ক্যাম্প ডেভিডে অনুষ্ঠিত জি-এইট সম্মেলন শেষে দেশে ফেরার পথে রোববার বিমানে বসে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
ইরান বিষয়ে পশ্চিমাদের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, “বিভিন্ন উৎস থেকে যেসব ইঙ্গিত পাওয়া গেছে সেগুলোর একটি হচ্ছে, সম্ভাব্য ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ হিসেবে সামরিক হামলার কথা ভাবা হচ্ছে। আমরা কূটনৈতিক ও গোয়েন্দা সূত্র থেকে জানতে পারছি, কয়েকটি দেশের রাজধানীতে সামরিক হামলার বিষয় পর্যালোচনা করা হচ্ছে।”
“এটা নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। ওই অঞ্চল ও বিশ্বে নতুন করে বিভাজন দেখা দিক এবং তিক্ত রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি হোক তা আমরা চাই না।”
পরমাণু বোমা তৈরির লক্ষ্যে ইরান পরমাণু কর্মসূচি চালাচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো অভিযোগ করলেও তেহরান তা অস্বীকার করে আসছে।
পরমাণু কর্মসূচি বন্ধে চাপ প্রয়োগের জন্য ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ইরানের অপরিশোধিত তেল আমদানির ক্ষেত্রে আগামী জুলাই থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। আর ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে জুনের শেষ দিকে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী বিশ্বের কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করলে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থবাজারে লেনদেন করতে পারবে না।
পশ্চিমাদের এসব নিষেধাজ্ঞা ও হুমকি-ধমকির কারণে এ বছর ইতোমধ্যেই ইরানের তেল রপ্তানি এক পঞ্চমাংশের বেশি কমে গেছে।
পরমাণু কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে ইরানের ওপর সামরিক হামলা না চালানোর জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে রাশিয়া।
সামরিক অভিযানের হুমকি পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে তেহরানকে ‘উৎসাহিত’ করবে বলেও রাশিয়ার পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়।
তেলের উচ্চমূল্য থেকে লাভবান হতে বিশ্বের অন্যতম তেল রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া ইরানকে ঘিরে উত্তেজনা জিইয়ে রাখতে চায় বলে যে অভিযোগ করা হয় তা নাকচ করেন রুশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের কাছে তেলের দাম গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে রাখতে চায় রাশিয়া।
পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আগামী ২৩ মে বাগদাদে ছয় বিশ্ব শক্তি- রাশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে ইরানের সমঝোতা আলোচনা পুনরায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
ওই বৈঠকে উত্থাপনের জন্য রাশিয়ার পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান সারগেই রিয়াবকোভ।