প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয়ের সামনে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১৮ দলের ৩৫ নেতাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোমবার সর্বশেষ জামিনে থাকা আসামি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকেও জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দেওয়া মামলা ছাড়াও বর্তমান সরকার বিএনপি নেতাদের নামে একের পর এক মামলা দিয়ে চলেছে।
জিয়া পরিবারের নামেই আছে ২৫টি মামলা। মামলাগুলোর মধ্যে একটি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর সাজাও হয়েছে। তারেক-কোকো মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে চিকিৎসার নামে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।
জিয়া পরিবার ছাড়াও বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের ১৫ নেতা একশ’ ৫৬ মামলার আসামি। মামলাগুলোর মধ্যে বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু একাই ৩২টি মামলার আসামি। দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন। তার মামলার সংখ্যা ৩১টি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গাড়ি পোড়ানো ও ভাঙচুরের মামলার চার্জশিটে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের ১৪ নেতার বিরুদ্ধে ১২৫টি মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এহসানুল হক মিলনের ৩১টি মামলাসহ ১৫ নেতার বিরুদ্ধে মোট মামলার সংখ্যা ১৫৬টি।
মামলাগুলোর মধ্যে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বিরুদ্ধে ৩২টি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিবুন্নবী খান সোহেলের ১৬টি, বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এমপির ১৪টি, যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমানের ৯টি, বিএনপির আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলমের ৯টি, স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাসের ৭টি, সাদেক হোসেন খোকার ৬টি, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেনের ৬টি, ব্রিগেডিয়ার জে. (অব.) হান্নান শাহের ৫টি, বিএনপির সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক নবী সোলায়মানের ৫টি, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম ফজলুল হক মিলনের ৫টি, ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর ৫টি, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ৩টি ও এমকে আনোয়ারের বিরুদ্ধে ৩টি মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সর্বোচ্চ হিসেবে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বিরুদ্ধে ৩২টি মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ৩২টি মামলার মধ্যে নলডাঙ্গা থানায় ১৪টি, নাটোর থানায় ৯টি, আত্রাই থানায় ৩টি, বাগমারা থানায় ২টি এবং রাজধানীর আদাবর, শাহবাগ, মাতিঝিল ও তেজগাঁও থানায় একটি করে মামলা রয়েছে।
মামলাগুলোর মধ্যে একটি হত্যা, ৭টি বিশেষ ক্ষমতা আইনের, ২টি বিস্ফোরক আইনের, একটি সম্পদের তথ্য গোপনের এবং অন্যান্য মামলাগুলো পুলিশের ওপর হামলা, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা।
মামলাগুলোর মধ্যে ২০০৭ সালে ১৮টি, ২০০৪ সালে ৫টি, ২০০৬ সালের ৬টি, ২০০৮ সালে একটি এবং ২০১২ সালে দায়ের করা হয়েছে ২টি মামলা।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিবুন্নবী খান সোহেলের বিরুদ্ধে ১৬টি মামলার উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলাগুলোর মধ্যে রমনা থানার ৯৪(৪)৯৮ নম্বরের একটি হত্যা মামলা রয়েছে। অপর মামলাগুলোর মধ্যে ৭টি বিস্ফোরক আইনের মামলা।
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এমপির বিরুদ্ধে ১৪টি মামলার মধ্যে রয়েছে লক্ষ্মীপুর থানার ২টি, রাজধানীর রমনা থানার ৮টি, শাহবাগ থানার ৪টি এবং বিমানবন্দর থানার একটি মামলা। মামলাগুলো চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, বিস্ফোরক আইন ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে দায়ের করা হয়েছে।
সাদেক হোসেন খোকার ৬টি মামলার মধ্যে রমনা থানায় ৩২(৭)৯৯ নম্বরের একটি হত্যা মামলা, ২টি দুর্নীতির মামলা, ২টি বিস্ফোরক আইনের মামলা এবং একটি দ্রুত বিচার আইনের মামলা রয়েছে।