জল্লাদের হাতে জিম্মি হন সুবেদার সিলেট কারাগারে সংঘর্ষে ৮ জন আহত

জল্লাদের হাতে জিম্মি হন সুবেদার সিলেট কারাগারে সংঘর্ষে ৮ জন আহত

সিলেট কারাগারে সোমবার সন্ধ্যায় একজন কারাবন্দির হাতে একজন সুবেদার জিম্মি হওয়ার ঘটনার জের ধরে সংঘর্ষে অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ওই সুবেদার সহ পাঁচ কারারক্ষী ও তিন বন্দি রয়েছেন।

আহত কারারক্ষীদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত বন্দিদের কারাগারের ভেতরেই চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছিলো কারাগারের ভেতরে।

সিলেটের মেয়র বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান, জেলা প্রশাসক খান মোহাম্মদ বেলাল ও জেলা পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন কারাগারে ঢুকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আহত অন্য চার জন হচ্ছেন হাবিলদার ওমর আলী ও কারারক্ষী সেলিম, আহসান ও মাহবুব। আহত বাকি তিনজন কারাবন্দি।

কারাফটকে বের হয়ে মেয়র কামরান সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার সূত্রপাত হয় সুবেদার ইউসুফকে জিম্মি করার মধ্য দিয়ে। বিকেলের খাবার দেওয়ার সময়ই এই ঘটনার শুরু। জিম্মিকারী একজন সাবেক জল্লাদ ফারুক। যার বিরুদ্ধে ৩টি খুনের অভিযোগ রয়েছে বলে জানান মেয়র কামরান। এই জল্লাদ ৮৪ বছরের সাজা ভোগ করছিলেন।

সূত্রে জানা গেছে, এর আগে সিলেট জেলখানায় বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদে ইউসুফ নামে ওই সুবেদারকে জিম্মি করে গুরুতর আহত করেন বন্দিরা। তাকে জিম্মি করে হামলা চালান কয়েকজন বন্দি।

প্রায় ২ ঘণ্টা তাকে জিম্মি করে রাখেন বিদ্রোহী বন্দিরা। এরপর বাইরে থেকে পুলিশের বিশেষ স্কোয়াড কারাগারের ভেতর অভিযান চালিয়ে আহত অবস্থায় সুবেদার ইউসুফকে উদ্ধার করে।

রাত পৌনে ৮টার দিকে কারা অভ্যন্তরে পুলিশের বিশেষ স্কোয়াডে অভিযান চলছিলো। অভিযানের সময় অনেক বন্দি আহত হয়েছেন বলে জানায় সূত্র।

রাত ৯টার দিকে মেয়র কামরান কারাগারের ভেতর থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের জানান, পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

তিনি জানান, মানসিকভাবে অপ্রকৃতিস্থ সাবেক এক জল্লাদই ঘটনার সূত্রপাত ঘটায়। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল আলমকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য দু’জন সদস্য হলেন, সিলেট জেলা পুলিশ ও মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন উধ্বতন কর্মকর্তা।

কারা ফটক থেকে বের হয়ে মেয়র কামরানের বক্তব্যের পুরো অংশ:  ‘জেলা প্রশাসক ফোন করে আমাকে ঘণ্টা খানেক আগে জানান, একজন কারা সুবেদারকে ৩ জন বন্দি আটক করে রেখেছে। এ খবর পেয়ে আমি কারাগারে ছুটে আসি। যিনি আটক করেছেন তিনি ৮৪ বছরের সাজাভোগকারী। ৩টি খুন করেছেন এ বয়স্ক লোক। তার সঙ্গের আরো দু’জন হচ্ছে বোরহান এবং জসিম। এই ৩ জন মিলে সুবেদারকে আটক করেন।’

ঘটনার মূল বিষয় বলতে গিয়ে মেয়র কামরান বলেন, ‘ফারুক জল্লাদের দায়িত্বপালন করে থাকেন। মানসিক অপ্রকৃস্থত ও ভারসাম্যহীনতার কারণে এই কাজটি তিনি করেছেন।’

আসামি অপর দু’জনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, আমরা আসলে কিছুই জানি না। সুবেদারকে আটক করার জন্য তিনি আমাদের ডাক দিয়ে নিয়ে এসেছেন। পরবর্তীতে জেল কর্তৃপক্ষসহ সবাই মিলে তাদের উদ্ধার করেন। এসময় ধস্তাধস্তির মধ্যে ৪ জন কারারক্ষি আহত হন। এরমধ্যে একজন একটু বেশি বাকি ৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আবার কারাগারে নিয়ে আসা হবে।

এটা কোনো ধরণের চিন্তার বিষয় নয় এবং বিদ্রোহও নয় বলে উল্লেখ করেন মেয়র কামরান। ঐ জল্লাদ সিলেট জেলেও এবং অন্যান্য জেলেও ফাঁসি দিয়েছেন বলেও জানান মেয়র কামরান।

এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক খান মো. বিল্লাল। তিনি জানান, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিগগিরই রিপের্ট দেওয়া হবে । কারও গাফলতি যদি থাকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । এছাড়া কয়েদি এবং আসামি সকলেই ভালো আছে।

বাংলাদেশ