স্কুলে মেয়েদের স্কার্ট পরতে বাধ্য করা লিঙ্গ বৈষম্য: মার্কিন আদালত

স্কুলে মেয়েদের স্কার্ট পরতে বাধ্য করা লিঙ্গ বৈষম্য: মার্কিন আদালত

স্কুলে মেয়ে শিক্ষার্থীদের স্কার্ট পরতে বাধ্য করা যাবে না। সংবিধানে নারী-পুরুষের সমানাধিকারের কথা বলা রয়েছে। তা সত্ত্বেও মেয়েদের জন্য পোশাক বেঁধে দেয়া অসাংবিধানিক। এক ধরনের লিঙ্গ বৈষম্যও বটে।

স্কুলে মেয়েদের স্কার্ট পরা বাধ্যতামূলক করার জেরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার একটি আদালত এই নির্দেশনা জারি করেছে। নর্থ ক্যারোলিনার উইলমিংটনের ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত চার্টার ডে স্কুলের কড়া নিয়ম-কানুন নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত হয়।

কিন্ডারগার্টেন থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় ওই স্কুলে। সেখানে সাদা বা গাঢ় নীল রঙের শার্টের সঙ্গে খাকি প্যান্ট পরে স্কুলে আসতে হয় ছেলেদের। মেয়েদের পরতে হয় স্কার্ট। ইউনিফর্মে একটু এদিক ওদিক হলে শাস্তি পেতে হয় শিক্ষার্থীদের।

২০১৬ সালে এই নিয়মের বিরুদ্ধে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালতে যান স্কুলের তিন শিক্ষার্থীর অভিভাবক। তারা জানান, কনকনে ঠান্ডায় স্কার্ট পরে স্কুলে যেতে সমস্যা হয় মেয়েদের। সব সময় পা জড়ো করে বসতে হয়। এমনকি স্কার্টের জন্য ইচ্ছে থাকলেও খেলাধুলা করা হয়ে ওঠে না।

অসাবধনতাবশত অন্তর্বাস বেরিয়ে পড়লে ছেলেরা তাদের উত্ত্যক্ত করে। আবার বকুনি খেতে হয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছেও। এসব মাথায় রাখতে গিয়ে পড়াশোনা ঠিক মতো করতে পারছে না মেয়ে শিক্ষার্থীরা। অভিভাবকদের দাবি, স্কার্টের বদলে ছেলেদের মতো প্যান্ট পরতে দেয়া হোক মেয়েদের।

গত তিন বছর ধরে সেই মামলার শুনানি চলার পর চলতি সপ্তাহে ওই তিন অভিভাবকের পক্ষে রায় দেন নর্থ ক্যারোলিনার ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের বিচারপতি ম্যালকম হাওয়ার্ড। তিনি জানান, সংবিধানে নারী-পুরুষ সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে।

চার্টার ডে স্কুল সেই নিয়ম মানছেন না। মেয়েদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে তারা। আদালতের এই সিদ্ধান্তে স্কুলের ঐতিহ্য ও নিয়ম-শৃঙ্খলায় প্রভাব ফেলবে বলে যুক্তি দেখান চার্টার ডে স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতে সায় দেননি বিচারপতি ম্যালকম হাওয়ার্ড।

নিজের মেয়ের হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছিলেন বনি পেল্টিয়ার। আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। তবে সেই সঙ্গে আফসোসও করেছেন তিনি। তার কথায়, মেয়েরা চাইলে প্যান্ট পরতেই পারে। এ টুকু বুঝতে আদালতের রায়ের অপেক্ষা করতে হল স্কুল কর্তৃপক্ষকে!

আন্তর্জাতিক