বিপিএলে বিদেশি ক্রিকেটারদের বকেয়া পরিশোধের শেষ সময় ছিলো ৯ মে। ফ্রেঞ্চাইজি দলগুলো ওই সময়ের মধ্যে ক্রিকেটারদের প্রাপ্য সম্মানীর পুরোটা দিতে পারেনি। সে জন্য বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল আরেকবার সময় বাড়িয়ে ৬ জুন পর্যন্ত বকেয়া পরিশোধের সুযোগ দিয়েছে।
বর্ধিত সময়ে বিদেশি ক্রিকেটাররা বাকি সম্মানী পেয়ে যেতে পারেন। সব শেষ হলে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কর্মকর্তারাও স্বস্তি পাবেন। ফ্রেঞ্চাইজিগুলোরও বুক ফুলিয়ে চলতে অসুবিধা হবে না। বিদেশিদের আলোচনায় আড়ালে উপেক্ষিত হচ্ছেন দেশের ক্রিকেটাররা। বিপিএলে খেলা স্থানীয় ক্রিকেটারদের বেশির ভাগ তাদের টাকা বুঝে পাননি। খুলনা রয়েল বেঙ্গলসের নাসির হোসেন ওরিয়ান গ্রুপের কাছে এখনও এক কোটি ছয় লাখ টাকা পাবেন। ওরিয়ান গ্রুপের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও লাভ হয়নি জাতীয় দলের এই ক্রিকেটারের। বাকিদের বেলাতেও একই ঘটনা ঘটলেও প্রকাশ্যে মুখ খুলতে পারছেন না । কেউ কেউ মুখ ফসকে কিছু বলে ফেললে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কর্মকর্তাদের জেরার মুখে পড়ছেন।
বিদেশি ক্রিকেটারদের এজেন্ট থাকায় তারা চাপ দিয়ে ফ্রেঞ্চাইজিদের কাছ থেকে পাওয়ান তুলে নিতে পারছেন। কিন্তু স্থানীয় ক্রিকেটারদের কোন এজেন্ট নেই। অভিভাবকহীন দেশের ক্রিকেটারদের পক্ষে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলও কোন কথা বলছে না। যদিও ৩১ মে পর্যন্ত স্থানীয়দের সম্মানী পরিশোধের সময় দেওয়া হয়েছে। বেঁধে দেওয়া সময়ে ক্রিকেটার বকেয়া টাকা পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। যেখানে বিদেশি ক্রিকেটারদের সম্মানী পরিশোধ করতে সময় বাড়ানো হয়েছে সেখানে স্থানীয়দের উপেক্ষিত হওয়াটা স্বাভাবিক।
আইকন ক্রিকেটারদের সম্মানী নিয়ে জটিলতা কাটেনি। খুলনা রয়েল বেঙ্গলসের অধিনায়ক ও আইকন সাকিব আল হাসান এবং দূরন্ত রাজশাহীর অধিনায়ক ও আইকন মুশফিকুর রহিম ছাড়া বাকিদের আইকনি সম্মান দেওয়া নাও হতে পারে। বলিশাল বার্নার্সের শাহরিয়ার নাফীস, সিলেট রয়্যালসের অলক কাপালি, ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের মোহাম্মদ আশরাফুল, চিটাগং কিংসের তামিম ইকবালের পারফরমেন্সেও হতাশ ফ্রেঞ্চাইজিগুলো। তাদেরকে আরেঠারে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে সম্মানীর পুরোটা তারা পাবেন না। এক্ষেত্রে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল ক্রিকেটারদের পক্ষ নিলেও খুব একটা লাভ নাও হতে পারে।
আন্তর্জাতিক খবর হওয়ায় এবং খেলোয়াড় এজেন্ট থেকে তথ্য ফাস করে দেওয়ায় ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স এসোসিয়েশন (ফিকা) ও গরম হয়ে উঠেছে। দুই দিন আগে ফিকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম মে বিসিবি সভাপতিকে কড়া ভাষায় চিঠি লিখে বিদেশি ক্রিকেটারদের সম্মানী পরিশোধের জন্য বলেছেন। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে সমস্ত বকেয়া না দিলে আইনি প্রক্রিয়ায় পারিশ্রমিক আদায়ের হুমকিও দিয়েছেন তিনি। অবশ্য বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সম্মানী দেওয়ার বিষয়েও বলেছেন ফিকা নির্বাহী।
ফিকা বিদেশিদের ব্যাপারে সোচ্চার হলেও স্থানীয়দের ব্যাপারে গরজ কম। বাংলাদেশ ক্রিকেট কল্যাণ সমিতি (কোয়াব) থেকেও খেলোয়াড়দের পাওনা আদায়ে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সব কিছু দেখার পর উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন স্থানীয় ক্রিকেটারদের অনেকে। তাদের কেউ কেউ ধরেই নিয়েছেন বিপিএলের টাকা আর পাবেন না। টাকা না পেয়ে অনেকের ধারণা হয়েছে পরের বছর থেকে আর বিপিএল হবে না।