প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক অধিকারের আন্দোলনে নেতৃত্বদাতা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য বারবার চেষ্টা হয়েছে। আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, খালেদা জিয়া। সবাই চেষ্টা করেছে কিন্তু কেউ আওয়ামী লীগকে শেষ করতে পারেনি। কারণ এই আওয়ামী লীগের শেকড় বাংলার জনগণের হৃদয়ে প্রোথিত।
আজ বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এগিয়ে যাব। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলব। এ দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করব। এ দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলব।
তিনি বলেন, এসব করতে সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। উন্নয়নের দিক থেকে বাংলাদেশ হবে রোলমডেল। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব।
এ সময় তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্যের কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের পাট, চা ও চামড়া বিক্রি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হতো। বাংলাদেশের অর্জিত এই টাকা বাংলার উন্নয়নে ব্যবহার হতো না। এই টাকা দিয়ে তারা পাকিস্তানের উন্নয়ন করত।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষও ছিল বেশি। সংখ্যাগরিষ্ঠের দিকটাও তারা দেখত না। এমনিভাবে বাংলাদেশের মানুষকে বঞ্চিত করেছে পাকিস্তানিরা।
পাকিস্তানিদের দ্বারা বাঙালিদের শোষণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের অর্থ দিয়ে তারা মরুভূমিতে ফুল ফুটিয়েছিল, আর আমাদের মরুভূমিতে পরিণত করতে চেয়েছিল। এর বিরুদ্ধেই ছিল বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনে কাজ করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১২৬টি দেশ থেকে স্বীকৃতি এনেছেন। প্রত্যেকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ পেয়েছে বাংলাদেশ। এক কোটি শরণার্থী দেশে ফেরত এসেছিল। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ওই আমলে সামরিক বাহিনী, প্রশাসনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে বাঙালিকে বঞ্চিত করার চিত্র তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
সভায় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য আমির হোসেন আমু, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, রমেশ চন্দ্র সেন, কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহবাহ উদ্দীন সিরাজ, মহানগর আওয়ামী লীগের (উত্তর) সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, (দক্ষিণ) সভাপতি আবুল হাসনাত, সাবেক ছাত্রনেতা আমিরুল আলম মিলন, আওয়ামী লীগ নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।