হিরো আলম গ্রেপ্তার

হিরো আলম গ্রেপ্তার

স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে বগুড়া সদর থানায় দায়ের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন হিরো আলম। আজ বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দেকে বগুড়া সদর থানা পুলিশ হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম জানান, তার স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমির বাবা সাইফুল ইসলাম খোকন মামলায় উল্লেখ করেছেন, দুই লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে হিরো আলম তার স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত।

হিরো আলমের মারধরে আহত স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাদিয়া বেগম সুমি বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই হিরো আলমের চারিত্রিক সমস্যা ছিল। সে একবার আমার ছোট বোনকে নিয়েও পালিয়েছিল। সংসদ নির্বাচন করে আলোচিত হওয়ার পর থেকেই সে বাড়িতে কম থাকে। সংসারের খোঁজখবর রাখে না। দুই মাস পর সোমবার রাতে সে বগুড়া শহরতলির এরুলিয়া গ্রামের বাড়িতে আসে। রাতে বিছানায় শুয়ে টানা তিন ঘণ্টা মোবাইল ফোনে ঢাকার এক নারীর সঙ্গে কথা বলতে থাকে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে সে আমাকে বেদম পিটিয়ে আহত করে।’

সুমি অভিযোগ করে বলেন, ‘হিরো আলম ঢাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করেছে বলে শুনেছি। এ কারণে সে বগুড়ায় থাকা স্ত্রী-সন্তানের কোনো খবর রাখে না। সংসারের খরচও দেয় না। এর প্রতিবাদ করলেই আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে।’

বগুড়া সদর থানার ওসি বদিউজ্জামান জানান, গত মঙ্গলবার রাতে হিরো আলম সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তাতে উল্লেখ করা হয়, স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহের জের ধরে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে তাঁর শ্বশুর সাইফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী সুমির নেতৃত্বে বাড়িতে চড়াও হয়ে কাঠের বাটাম দিয়ে তাঁকে পেটানো হয়। পরে তিনি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিত্সা নিয়ে স্ত্রী-শ্বশুরসহ পাঁচজনের নামে এই অভিযোগ দেন।

বগুড়া সদর থানার সাব-ইন্সপেক্টর আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমরা প্রথমে হিরো আলমের কথাই সত্যি ভেবেছিলাম। পরে তদন্তে জানা গেছে, হিরো আলমই প্রথমে তাঁর স্ত্রীকে বেদম মারধর করেন। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে পিটিয়েছে। আর ঘটনার পর থেকেই হিরো আলম আত্মগোপন করেছেন। তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ।’

হিরো আলমের শ্বশুর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়েকে নির্যাতনের খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যাই। মেয়েকে উদ্ধার করে মঙ্গলবার রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করেছি। আমার মেয়েকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় হিরো আলমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করব। পরকীয়া ও দ্বিতীয় বিয়ে করা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বিরোধের জের ধরে সে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’

এরুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মণ্ডল বলেন, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, হিরো আলমের চরিত্র ভালো না। এর আগে শ্যালিকাকে নিয়ে পালানোর বিচার আমিই করেছিলাম। এখন আবার এই ঘটনায় এলাকায় ঢি ঢি পড়ে গেছে।’

গতকাল বুধবার সকাল থেকে একাধিকবার হিরো আলমের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে। এরুলিয়া বাজারে তাঁর অফিস এবং বাড়িতে গিয়েও তাঁর সন্ধান মেলেনি।

বিনোদন