ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সফরের একদিন পরই দেশটির কাশ্মীর নীতির সমালোচনা করেছে মুসলিম দেশগুলোর জোট অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন-ওআইসি। ৫৭টি দেশকে নিয়ে গঠিত এ সংগঠন বলছে, ২০১৬ সাল থেকে কাশ্মীরে আরও বেশি বর্বর আচরণ করছে ভারত। কাশ্মীর নীতি ভারতের একান্ত নিজস্ব বিষয় উল্লেখ করে ওআইসির বক্তব্যের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে নয়াদিল্লি। একই সঙ্গে পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলায় সন্ত্রাসীদের হতাহতের কোনো প্রমাণ প্রকাশ করা হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছে ভারত।
জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তান তীব্র উত্তেজনার মধ্যেই গেল শুক্রবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়োজিত মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসির সম্মেলনে অংশ নেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তবে ভারতকে আমন্ত্রণ জানানোয় সম্মেলনে বয়কট জোটের অন্যতম সদস্য দেশ পাকিস্তান।
সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করলেও দেশটিকে ইঙ্গিত করে কড়া আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, যে সমস্ত দেশ সন্ত্রাসকে প্রশয় দেয় তাদের বিরুদ্ধে অন্য দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।
যদি মানবতাকে রক্ষা করতে চাই তাহলে যে সমস্ত দেশ সন্ত্রাসকে আশ্রয় দেয়, অর্থ সাহায্য করে তাদের এ ধরনের কাজ করা থেকে সরে আসার বার্তা দেওয়া উচিত। সন্ত্রাস এবং চরমপন্থার দুটি আলাদা নাম আছে। কিন্তু এই দুটিই ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা করে তৈরি হয়। সুষমার এই ভাষণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাশ্মীর প্রসঙ্গে নিজেদের প্রস্তাব পেশ করে ওআইসি। ভারতের সমালোচনার পাশাপাশি পাকিস্তানের প্রশংসা করা হয় প্রস্তাবনায়। ভারতীয় বিমান সেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রশংসা করা হয় ওআইসি-র তরফে।
এবারই প্রথম ভারতকে ইসলামিক দেশগুলির এই সভায় ডাকা হয়েছিল। এরই মাঝে পুলওয়ামার জঙ্গি হানার পাল্টা হিসেবে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে এয়ার স্ট্রাইক করে ভারত। তারপর ভারতকে যাতে এই সভায় ডাকা না হয় তার জন্য তদ্বির করে ইসলামাবাদ। তবে সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। প্রতিবাদে বৈঠকে অনুপস্থিত থাকেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মামুদ কুরেশি।