মার্কিন চালকহীন বিমান বা ড্রোন নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনা কেন্দ্রে ইরান সফল ভাবে সাইবার হামলা চালিয়েছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চালানোর ধৃষ্টতা দেখানোর জবাবে এ সাইবার হামলা চালানো বা হ্যাক করা হয় বলে জানান ইরানের ইসলামি বিপ্লবী বাহিনী বা আইআরজিসির বিমানমহাকাশ বাহিনীর কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আমির আলি হাজিজাদেহ।
তেহরানের এক অনুষ্ঠানের অবকাশে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চালাতে আমেরিকা শোচনীয় ভাবে ব্যর্থ হয়েছে এ কথা ওয়াশিংটনকে জানিয়ে দেয়ার জন্যেই তাদের কম্পিউটার ব্যবস্থায় ঢুকেছিল আইআরজিসি।
ইরানের চালানো সাইবার হামলার ঘটনা এখন প্রকাশ করার কারণও ব্যাখ্যা করেন তিনি। জেনারেল হাজিজাদেহ বলেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রাংশ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য আমেরিকা দিয়েছে তার জবাবে এ ঘটনা প্রকাশ করা হলো।
মার্কিনীরা কিছু কিছু যন্ত্রাংশ বিগড়ে দিয়ে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র নস্যাৎ করতে চেয়েছিল বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, এতে আকাশে ওড়ার সময়ে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে বিস্ফোরণ ঘটার কথা ছিল। কিন্তু ইরান আগেভাগেই মার্কিন এ অভিসন্ধি আঁচ করতে পেরেছিল এবং এ জাতীয় তৎপরতা বন্ধে নিয়েছিল জোরালো পদক্ষেপ।
চলতি মাসের ১২ তারিখে প্রকাশিত নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চালানোর গোপন কর্মসূচি পুনরায় শুরু করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার। ইরানের সামরিক এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়ার বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ তৎপরতা আবার চালু করা হয়।
খবরে আরো বলা হয়েছে, সরবরাহ ব্যবস্থায় ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রাংশ ঢুকিয়ে দিয়ে ইরানের বিমানমহাকাশ কর্মসূচি নস্যাৎ করার গোপন পরিকল্পনার সূচনা হয়েছিল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে।
আর সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলের প্রথম দিকে এ তৎপরতা বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল। অবশ্য ২০১৭ সালে এ তৎপরতা স্তিমিত হয়ে যায়।
এদিকে, গত শুক্রবারে দেয়া বক্তব্যে আইআরজিসি জানিয়েছে যে তারা মার্কিন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে ঢুকেছে এবং হাতিয়ে নিয়েছে ড্রোন পরিচালনা ব্যবস্থা। এতে সিরিয়া এবং ইরাকের আকাশে গোয়েন্দা তৎপরতায় নিয়োজিত অন্তত ৮ মার্কিন ড্রোনের পরিচালনা ব্যবস্থা হাতিয়ে নিয়েছে ইরান। এ সব ড্রোন পরিচালনায় নিয়োজিত মার্কিন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে সাইবার ব্যবস্থার মাধ্যমে ঢুকে এ কাজ করা হয়েছে। এ ছাড়া, এ সব ড্রোনের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে সংগৃহীত মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের ওপর আইআরজিসি নজরদারি করেছে এবং সে সব তথ্যও ইরানি বিপ্লবী বাহিনীর কাছে চলে এসেছে।