চট্টগ্রামে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টকারী যুবক গুলিতে নিহত হয়েছেন। সেনা কমান্ডোদের বিশেষ অভিযানে ৮ মিনিটের মধ্যেই গুলিবিদ্ধ হয় সেই ছিনতাকারী। তাকে বাইরে বের করে আনার পর সে মারা যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান। মৃত্যুর আগে ছিনতাইকারী নিজের নাম ‘মাহাদী’ বলে দাবি করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। অন্য একটি সূত্র থেকে তার নাম ‘সাগর’ বলে জানা গেছে।
আজ রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের বিজি-১৪৭ নং ফ্লাইটটি দুবাইয়ের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে উড়াল দেয়। ঢাকা-চট্টগ্রামের মাঝামাঝি অবস্থায় থাকার সময় সেই যুবক অস্ত্র দেখিয়ে বিমানের পাইলটদের জিম্মি করার চেষ্টা করে। হঠাৎ উড়োজাহাজের ভেতরে যাত্রীদের আসনে থাকা ওই ব্যক্তি উঠে ককপিটের দিকে আসেন। এরপর এক ক্রুকে ধাক্কা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বিমানটি ছিনতাই করব! আমার কাছে অস্ত্র আছে।’
বিমানটিতে থাকা একজন ক্রু বলেন, সেই ব্যক্তির এমন আচরণ দেখে পাইলট মোহাম্মদ শফি ও সহকারী পাইলট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বিমানটির ককপিটের দরজা বন্ধ করে দেন। সঙ্গে সঙ্গে তারা কৌশলে জরুরি অবতরণের জন্য চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে বার্তা পাঠান। ককপিট বন্ধ করে দেওয়া আরও ক্ষেপে যায় সেই অস্ত্রধারী ব্যক্তি। তিনি চিৎকার করছিলেন। রীতিমতো হুমকি দিয়ে বলছিলেন, ‘ককপিট না খুললে বিমান উড়িয়ে দিব।’
নিজের হুমকির প্রমাণ করতে সেই অস্ত্রধারী বিমানের মধ্যে একটি বিস্ফোরণ ঘটায়। এর মধ্যেই বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণ করে ফেলে। উড়োজাহাজ অবতরণের পর কৌশলে উড়োজাহাজের ডানার পাশের ৪টি ইমারজেন্সি গেট দিয়ে ১৪২জন যাত্রী নিরাপদে নেমে পড়েন। বিমানে দুই পাইলট ছাড়াও ৫জন ক্রু ছিলেন; যাদের মধ্যে দুজন নারী। সঙ্গে সঙ্গে বিমানটি ঘিরে ফেলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ছুটে আসে কমান্ডো বাহিনী। প্রথমে অস্ত্রধারী সেই যুবককে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানায় কমান্ডোরা। কিন্তু সেই যুবক এতে রাজী না হওয়ায় কমান্ডো অভিযান শুরু হয়। মাত্র ৮ মিনিটের অভিযানে সেই যুবককে কব্জা করতে সক্ষম হয় কমান্ডোরা। বিমানের ভেতর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক হয় সে। বাইরে আনার কিছু সময় পর তার মৃত্যু হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান। এর সঙ্গেই দুই ঘণ্টার বিমান ছিনতাই নাটকের অবসান হলো