চট্টগ্রামে নির্মিতব্য উপমহাদেশের প্রথম নদীর নিচ দিয়ে সড়ক টানেল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ এবং নগরের লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের মূল কাজের উদ্বোধন করতে আজ রবিবার চট্টগ্রাম যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে চট্টগ্রাম শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টানেল এলাকা পর্যন্ত ভিআইপি সড়কে টহল দিচ্ছে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা। প্রকল্প এলাকায় মেটাল ডিটেক্টর ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ, র্যাব, নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
জানা গেছে, আজ সকাল ১১টার দিকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম পৌঁছাবেন। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তিনি সড়ক পথে নিকটস্থ টানেল এলাকায় যাবেন
টানেলের বোরিং কাজ উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পাইলিং কাজের উদ্বোধন করবেন। সেখান থেকে তিনি রেস্ট হাউজে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে পতেঙ্গা সাগর পাড়ে আয়োজিত ব্যতিক্রমী এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন।
অনুষ্ঠান শেষ করে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ বিমানে ফিরতি ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরবেন।
কর্ণফুলী টানেলের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, খননকাজের জন্য মেশিন পুরোপুরি প্রস্তুত। সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই চার লেনের টানেল খনন করতে সময় লাগবে দুই বছর। এখন যে কাজের গতি, এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২২ সালে এই টানেল দিয়ে গাড়ি চলবে।
জানা গেছে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের জিটুজি মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে; প্রকল্পে চীনের প্রকৌশলীসহ ৫৫০ জন এবং দেশের এক হাজার ২০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন। ২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বাংলাদেশে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এরপর অর্থছাড় নিয়ে নানা জটিলতা কাটিয়ে ২০১৮ সালে প্রকল্প নির্মাণে গতি পায়।
টানেল নির্মাণের ফলে চট্টগ্রাম মূল শহরের সঙ্গে কর্ণফুলীর অপর প্রান্ত আনোয়ারার নিরবচ্ছিন্ন এবং সহজ যোগাযোগ হবে। আর এতে আনোয়ারা-বাঁশখালী উপকূলীয় এলাকায় শিল্পের প্রসার ঘটবে। টানেল ঘিরে সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে, মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সাগরপার দিয়ে বিকল্প মহাসড়ক নির্মাণ এবং পরে যা মিয়ানমার হয়ে চীনের কুনমিং পর্যন্ত এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা। এর ফলে চট্টগ্রাম হয়ে উঠবে নতুন অর্থনৈতিক করিডর।
টানেল ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী আজ উদ্বোধন করবেন ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। তিন হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর লালখান বাজার থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। মাঝখানে ৯টি পয়েন্টে ওঠানামার সুযোগ রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের সয়েল টেস্ট চলছে।