বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের লোকসভার স্পিকার মীরা কুমারের ঢাকা আসার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তার না আসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত মোটামুটি চূড়ান্ত হয়েছে।
মীরা কুমারের পরিবর্তে ঢাকায় এ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসছেন ভারতের কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সালমান খুরশিদ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান।
বাংলাদেশের এ অনুষ্ঠানে তিনি ভারতের প্রতিনিধি হয়ে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
ঢাকায় বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত নজরুল ইসলামের ১১৩তম জন্মবার্ষিকীর আয়োজনে ভারতের প্রতিনিধি পাঠানোর সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়। এছাড়া ‘বিদ্রোহী’ কবিতার ৯০ বছর পূর্তিও ভারতের সঙ্গে যৌথ আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত হয়।
আগামী ২৫ মে ঢাকায় নজরুলের জন্মজয়ন্তীর মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
‘বিদ্রোহী’ কবিতা রচনার ৯০ বছর পূর্তি হবে আগামী ২৫ জুন। ২৫ ও ২৬ জুন এ উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
তবে এবারের জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানেও ‘বিদ্রোহী’ কবিতার ৯০ বছর পূর্তিকে বিশেষ সম্মান জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ভারতের লোকসভার স্পিকার মীরা কুমারির ঢাকা আসার কথা মে মাসের শুরু থেকেই জানানো হয়। তবে বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে দিল্লি থেকে জানানো হয় তার না আসার সম্ভাবনা বেশি। তার বদলে অবশ্য আইনমন্ত্রী সালমান খুরশিদকে ঢাকা পাঠানো হচ্ছে বলে জানানো হয়।
সালমান খুরশিদ ভারতের তৃতীয় রাষ্ট্রপতি ড. জাকির হোসেনের ছেলে। তিনি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া শেষে ওই ইউনিভার্সিটির অধীনস্ত ট্রিনিটি কলেজে কিছুদিন শিক্ষকতাও করেন।
২০১১ সালের ৬ মে রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকীতে ঢাকায় যৌথ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে এসেছিলেন ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি।
সেসময় হামিদ আনসারির সঙ্গে সোনারগাঁও হোটেলে সাক্ষাৎকালীন বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ার অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে কাজী নজরুল ইসলামও আলোচনায় উঠে আসে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মসার্ধশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উপলক্ষে ঢাকা সফরে আসায় সেদিন ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারিকে ধন্যবাদ জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘কবি নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তবে তিনি দীর্ঘদিন ভারতে বসবাস করেছেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে বাঙালির জন্য অন্যতম উদ্দীপনা ছিল কাজী নজরুলের কবিতা।’ শুধু রবীন্দ্র কেন, নজরুলের জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানও যেন ভারতে হয় সে বিষয়ে উপ-রাষ্ট্রপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বিরোধীদলীয় নেতা।
খালেদার ওই প্রস্তাবটি নয়াদিল্লিতে গিয়ে জানিয়েছিলেন হামিদ আনসারি। এরপর থেকেই নানাভাবে বিষয়টি সমাধানের সুযোগ খোঁজা হচ্ছিল।
তবে এরইমধ্যে আবারও রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকীর বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপনীর সময় চলে আসে। আবার ২০ দিন পরই নজরুলের জন্মজয়ন্তী।
সবমিলিয়ে ঢাকায় কাজী নজরুলের জাতীয় ও সংস্থাভিত্তিক কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ভারতের একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ঢাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।