ঢাকা: আগামী এক বছরে ৬৪ জেলায় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি জেলায় জেলায় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প উদ্বোধনের পাশাপাশি জনসংযোগমূলক কর্মসূচিতেও অংশ নেবেন।
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের উন্নয়ন কর্মকানণ্ড ও সফলতা জনগণের মাঝে তুলে ধরতে প্রধানমন্ত্রীর জেলায় জেলায় যাওয়া মূল উদ্দেশ্য বলে দলের নেতারা জানিয়েছেন।
এরই অংশ হিসেবে এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা সফরের কর্মসূচি শুরু করে করে দিয়েছে।
কয়েকটি জেলায় তিনি সরকারি প্রকল্প উদ্বোধনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় অংশ নিয়েছেন।
আগামী ১১ ডিসেম্বর প্রধানম্ন্ত্রী শেখ হাসিনা নাটোর যাচ্ছেন। সেখানে তিনি একটি ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক হানিফ আলী শেখের স্মরণ সভায় যোগ দেবেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীর শারদায় পুলিশের বার্ষিক প্যারেড অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
নাটোর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রয়াত নেতার স্মরণ সভার কর্মসূচি নেওয়া হলেও দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এটি বিশাল জনসভায় রূপান্তরিত হবে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
নাটোরের থানাইখালী ময়দানে এ স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। স্মরণ সভায় বিপুল জনসমাগম ঘটানোর জন্য এরই মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ দিন পর শেখ হাসিনা নাটোর যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাটোর আগমণকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও প্রাণ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে বলে রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বাংলানিউজকে জানান।
এদিকে চলতি ডিসেম্বর মাসেই প্রধানমন্ত্রীর আরও দু’টি জেলা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দু’টি জেলা হলো বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর ও রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট।
আগামী বছর জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রয়েছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরেই জয়পুরহাটে জয়পুরহাটে প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবু সাঈদ আল মামুদ স্বপন আরও জানান।
আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম তুলে ধরতে এবং বিরোধী দলের রাজপথের আন্দোলন রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার কৌশল হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কর্মসূচিগুলোতে অংশ নিচ্ছেন।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি রাজপথের আন্দোলনের কর্মসূচিতে নেমেছে। বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়া রোডমার্চ কর্মসূচি দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গণসংযোগে নেমেছেন।
এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেলা সফর বিরোধী দলের কাউন্টার শো ডাউন হিসেবেও দেখছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
প্রধানমন্ত্রী যেখানে যাচ্ছেন সেখানেই জনসভা, সমাবেশের আয়োজন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর এসব কর্মসূচিতে বিপুল জনসমাগম হচ্ছে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচিকে সফল করতে দলের নেতা-কর্মীরাও সাংগঠনিকভাবে তৎপর হয়ে উঠছেন।
এ বিষয়গুলোকে বিবেচনায় নিয়ে আগামীতে প্রতিটি জেলায় পর্যায়ক্রমে এ ধরনের কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী অংশগ্রহণ করবেন বলে দলের নেতারা আরও জানান।
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায়ও জেলায় জেলায় এ ধরণের কর্মসূচির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর যাওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে।
তাছাড়া মন্ত্রী পরিষদের এক সভায়ও প্রধানমন্ত্রী জেলায় জেলায় উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ করার জন্য মন্ত্রীদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী সরকারের গৃহীত এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।
পাশাপাশি ওই সব এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জনসভা আয়োজন করাও নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
ইতোমধ্যেই নীলফামারী, লালমনিরহাট, চাপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, গাজীপুর, গোপালগঞ্জ ও কক্সবাজারের এ ধরনের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
এসব স্থানে বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্য তুলে বক্তব্য রাখছেন।