অসুস্থ মিরাংকার পাশে জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ

অসুস্থ মিরাংকার পাশে জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ

অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে পাওয়া সম্মানী থেকে একলাখ টাকার সহযোগিতা তুলে দিয়ে অসুস্থ মিরাংকার পাশে দাঁড়ালেন বরগুনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ।

আজ বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মিরাংকার বাবা-মায়ের হাতে এ অর্থ তুলে দেন তিনি। এ সময় বরগুনা পৌরসভার মেয়র মো. শাহাদাত হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহবুব আলম, নারী নেত্রী সোহেলী পারভিন ছবি এবং সাংবাদিক জাহাঙ্গির কবীর ও সোহেল হাফিজসহ মিরাংকার মা অনিতা সিকদার, বাবা মানিক সিকদার এবং ছোট ভাই অংকুর সিকদার দ্বীপ উপস্থিত ছিলেন। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার উন্নত চিকিৎসার জন্য মিরাংকাকে নিয়ে মিরাংকার বাবা-মায়ের ভারতের চেন্নাই যাওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি কালের কণ্ঠ অনলাইনে মেধাবী শিক্ষার্থী মিরাংকা সিকদারকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন পড়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদসহ অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন মিরাংকার চিকিৎসার্থে। প্রতিবেদনটি দেখে সর্বপ্রথম এগিয়ে আসে বরগুনার এসএসসি ব্যাচ-৯৩-এর বন্ধুরা। হাত বাড়িয়ে দেয় সহযোগিতার। নিজ নিজ সামর্থঅনুযায়ী মিরাংকার জন্য সাহায্য পাঠাতে থাকে রাজধানী ঢাকাসহ বরগুনাস্থ ব্যাচ ৯৩-এর বন্ধুরা।

ব্যাচ-৯৩-এর বন্ধুদের ডাকে সাড়া দেন বরগুনার সাবেক পুলিশ সুপার ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাক, বরগুনার বর্তমান পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ এবং প্রিন্সিপাল রাজিয়া ফাউন্ডেশনসহ আরো অনেক হৃদয়বান ব্যক্তি।

মিরাংকা সিকদারের চিকিৎসার জন্যে এ পর্যন্ত প্রায় দুলাখ টাকার সহযোগিতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মিরাংকার বাবা-মা। এ ছাড়া নিজেদের সঞ্চিত অর্থ রয়েছে আরো এক লাখ টাকা। মিরাংকার অপারেশন, ভারত যাওয়া-আসা এবং থাকা-খাওয়া বাবদ সর্বমোট চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের। তাই মিরাংকার চিকিৎসার জন্য এখনো দুলাখ টাকার প্রয়োজন জানিয়ে স্বচ্ছল ও সহৃদয়বান ব্যক্তি বর্গের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন মিরাংকার অসহায় বাবা-মা।

মিরাংকার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়াতে মা অনিতা সিকদার (০১৯২৫৪৩৮৫৯৯) এবং ছোট ভাই অংকুর সিকদার-এর মোবাইল নম্বরে (০১৭১৯৭৮২৭৭১) যোগাযোগের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বরগুনার মেয়ে মিরাংকা সিকদার বরিশাল বিএম কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী। বাংলা বিভাগ থেকে এবার মাস্টার্স পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিলো তার। বছর খানেক আগে মিরাংকার শরীরে ধরা পড়ে এক জটিল ব্যাধি। ডান পাশের একটি কিডনি বিকল তার। তার উপরে লিভার আর কিডনির ঠিক মাঝখানে বেড়ে উঠেছে আরেকটি টিউমার। বাংলাদেশে ভালো কোনো চিকিৎসা নেই মিরাংকার। উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের চেন্নাই যাওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের। আর এ জন্য চাই চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা।

এর আগে ২০১৫ সালে বরগুনার বাজারে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মিরাংকার বাবা মানিক সিকদারের একমাত্র উপার্জনের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। নিঃস্ব হয়ে পড়ে মিরাংকার পরিবার। থেমে যায় সব হাসি-আনন্দ। মিরাংকার সহপাঠীদের আদর করে যখন তাদের বাবা-মা খাইয়ে দেন ঠিক তখন মিরাংকা পরিশ্রম করে চলে দিনান্ত। চরম অসুস্থ শরীর নিয়েও চলে তার অর্থ উপার্জনের কাজ। একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ল্যাব সহকারীর কাজ করে চলতো মিরাংকার লেখাপড়া।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর