পাকিস্তানের পক্ষে মন্তব্য করে তোপের মুখে সিধু

পাকিস্তানের পক্ষে মন্তব্য করে তোপের মুখে সিধু

জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় হামলা নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের কেবিনেট মন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা নভজোত সিং সিধু।

১৫ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার ওই হামলার নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিতে আসা সিধু। তবে এসময় একটি মন্তব্য তাকে দেশবাসীর রোষাণলে ফেলে। কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে সিধু বলেন, ‘মুষ্টিমেয় কিছু লোকের জন্য পুরো জাতিকে দোষারোপ করা কি ঠিক?’

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে হামলার স্বীকার হয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। এ সময়ের মধ্যে পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গিরা যত হামলা চালিয়েছে ১৪ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবারের হামলাটিই তার মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী।

এদিন জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) গাড়িবহরে বিস্ফোরক বোঝাই একটি গাড়ি হামলায় ৪৬ জন আধা-সামরিক সেনা নিহত হয়। হামলার সময় পুলাওয়ামা জেলার শ্রীনগর-অনন্তনাগ মহাসড়কের ওপর দিয়ে জম্মু থেকে শ্রীনগরে যাচ্ছিল সিআরপিএফ’ এর গাড়িবহরটি। জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহম্মদ হামলার দায় স্বীকার করেছে।

হামলার পর দেশের সব রাজনৈতিক দল সরকার এবং সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে উরির সেনা ছাউনিতে জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছিল ১৯ সেনাকর্মী। কিন্তু এবারের এ হামলা উরির ভয়াবহতাকেও ছাপিয়ে গেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ হামলার পেছনে জড়িতদের ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন। যদিও মোদি কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি। তবে তার বেশ কিছু মন্ত্রী এবং নেতা এই ঘটনার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করেছেন।

জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন নভজোত সিং সিধুও। তিনি বলেন, ‘এটা (সন্ত্রাসী হামলা) কাপুরুষোচিত কাজ। আমি দৃঢ়ভাবে এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। এটি যারা ঘটিয়েছে তাদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিৎ।’

‘যে ঘটনা ঘটেছে পুরো আন্তর্জাতিক মহলে এর নিন্দা হওয়া উচিৎ। ভেতর থেকে আত্মউপলব্ধী হওয়া দরকার। আলোচনার মধ্যমে একটি স্থায়ী সমাধান হওয়া দরকার। আন্তর্জাতিক কমিউনিটিকে সঙ্গে নিয়ে চাপ সৃষ্টি হওয়া দরকার। কাউকে গালি দিয়ে এর সমাধান হবে না, ভাই।’

সিধু আরো বলেন, ‘কিছু মুষ্টিমেয় মানুষের জন্য আমরা কি পুরো জাতিকে দোষারোপ করতে পারি? আপনি কি কোনো একজন ব্যক্তিকে দোষ দিতে পারেন?’

সিধু এই বক্তব্যের প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় ওঠে। অনেকেই সিধু পাকিস্তানের দালাল বলছেন। কেউ কেউ জনপ্রিয় কমিডি শো ‘দ্যা কপিল শর্মা শো’ থেকে তাকে বাদ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

গত বছর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা নভজোত সিং সিধু। ওই সময় তিনি পাকিস্তানি সেনা প্রধান কামার জাভেদ বাজওয়াকে আলিঙ্গন করেছিলেন। তবে সেবার তিনি বাজওয়া এবং ইমরানের কাছ থেকে দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশে অবস্থিত শিখ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থস্থান কারতারপুর সাহিবে যাওয়ার করিডোর খুলে দেয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন। পরে ক্রিকেটার বন্ধুকে দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করেন ইমরান খান। কারতারপুর সাহিব করিডোর খুলে দেয়া হলে রাজ্যের জনগণ এমনকি পুরো ভারতেই প্রশংসিত হন সিধু।

আন্তর্জাতিক