প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নবম ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদের সুপারিশমালা পরীক্ষা করে দ্রুত গেজেট প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, সরকার সাংবাদিক ও সংবাদ কর্মীদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে প্রতি ৫ বছর পর পর ওয়েজবোর্ড গঠন করছে। নবম ওয়েজবোর্ড সব সংবাদপত্র ও গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য ৪৫ ভাগ মহার্ঘভাতা প্রদানের সুপারিশ করেছে।
আজ বুধবার সংসদে তাঁর নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসচ্ছল, অসুস্থ ও দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক এবং নিহত সাংবাদিকদের অনুকূলে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ‘বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ গঠন করা হয়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত এ ট্রাস্ট থেকে মোট ১ হাজার ৩৯৬ জনকে মোট ১০ কোটি ৭ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ তহবিলে ২ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ তহবিল থেকে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট ফান্ডে সিড মানি হিসেবে ২০ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। এ নিয়ে কল্যাণ ট্রাস্ট ফান্ডে বর্তমানে মোট ৩৫ কোটি টাকা সিড মানি রয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্য প্রবাহের অধিকার সুরক্ষায় অঙ্গীকারাবদ্ধ। ইতোমধ্যে সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদের আলোকে দেশে গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে সাংবাদিকদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যাপক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৪টি টেলিভিশন লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৩টি সম্প্রচার করছে। ২৮টি এফএম রেডিও-এর লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি এফএম রেডিও সম্প্রচার করছে। এলাকা ও অঞ্চলভিত্তিক ৩২টি কমিউনিটি রেডিও লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে, এর মধ্যে ১৭টি সম্প্রচারে রয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে সারাদেশে প্রকাশিত মোট দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা ১ হাজার ২৪৮টি, যার মধ্যে ঢাকা থেকে প্রকাশিত পত্রিকার সংখ্যা ৫০২টি ও আঞ্চলিক পত্রিকার সংখ্যা ৭৪৬টি। সারাদেশে সাপ্তাহিক পত্রিকার সংখ্যা ১ হাজার ১৯২টি, মাসিক পত্রিকার সংখ্যা ৪১৪টি ও অন্যান্য পত্রিকার সংখ্যা ৪১টি। এ ছাড়াও ২ হাজার ২১৭টি অনলাইন মিডিয়া রয়েছে, যার মধ্যে অনলাইন পত্রিকা ১ হাজার ৮৭৪টি, ইন্টারনেট টেলিভিশন ২৫৭টি, অনলাইন রেডিও ৪৫টি ও ই-পেপার ৪১টি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রচার আইন, ২০১৮ এর খসড়া তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত অক্টোবরে খসড়া আইনটি নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে। এটি গত ৪ নভেম্বরে ভেটিংয়ের জন্য লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা-২০১৪ এর অনুচ্ছেদ ৩.২.২ থেকে বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য পরিবেশনের বিরুদ্ধে সতর্ক করা হয়েছে। দেশের প্রচলিত অন্যান্য আইনেও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের বিরুদ্ধে বিধি-নিষেধ রয়েছে। মিথ্যা সংবাদ প্রচার করলে টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরি সুরক্ষার জন্য ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরি ও শর্তাবলী) আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। গত বছর ১৫ অক্টোবরে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এর নীতিগত অনুমোদন করা হয়।