নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অন্তঃসত্ত্বা হোসনে আরা বেগমকে ওএসডির কারণে মৃত সন্তান জন্মদান নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে আজ সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সরকারি দলের দুই সিনিয়র সংসদ সদস্য। তাঁরা ওই নারী ইউএনও’র ওএসডি’র কারণ জানতে চেয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন এবং তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে এ সংক্রান্ত আলোচনা উত্থাপন করেন সাবেক নারী ও শিশু প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী। পরে তাঁর সেই বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে কথা বলেন নারায়ণগঞ্জ সদর আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান।
বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত এক সংক্রান্ত সংবাদের প্রতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে মেহের আফরোজ চুমকী বলেন, ওই ইউএনও আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেছেন মা হওয়াটাই অপরাধ। সেই নারী ইউএনও দীর্ঘ ৯ বছর পর মা হতে যাচ্ছিলেন। সেই নারী গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার কাজের কোন গাফিলতি ছিল না, বরং উর্বধতন কর্মকর্তারা প্রশংসা করেছেন। তিনি আরো বলেন, হোসনে আরা বেগমের সন্তান প্রসব করার সময় ছিল আগামী এপ্রিল মাসে। কিন্তু সে যখন ডাক্তার দেখাতে গেছেন, তখন সে আকষ্মিক জানতে পারেন তাঁকে ওএসডি করা হয়েছে। সেদিন ওএসডি হওয়ার খবর শুনে তাৎক্ষণিক মানসিক চাপে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। অকালপক্ক সন্তান প্রসব করায় বাচ্চাটা এখন মৃত্যু পথযাত্রী। দীর্ঘ ৯ বছর পর সে মা হওয়ার আকাঙ্খাটা উপলদ্ধি করতে পেরেছেন। আমার প্রশ্ন, ওই সরকারি কর্মকর্তা যদি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন, তাহলে একজন সন্তান সম্ভ্যভা নারীকে কেন ওএসডি করা হলো? এ ঘটনায় আমি বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি।
পরে ফ্লোর নিয়ে শামীম ওসমান বলেন, বিষয়টিতে আমি লজ্জিত, কেননা ঘটনাটি আমার নির্বাচনী এলাকায়। তিনি আমার এলাকার সদরের ইউএনও। একজন সৎ কর্মজীবী অত্যন্ত কর্মঠ ও ভাল একজন কর্মকর্তা হিসেবে উনি আমার কাছে বার বার প্রতিয়মান হয়েছেন। নির্বাচনে ঠিক আগ মুহুর্তে আমি ওই কর্মকর্তাকে বলেছিলাম আপনি পারবেন কি না? তখন উনি ৪-৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তখন উনি বলেছিলেন কাজটি করতে পারলে উনি সুস্থ থাকবেন। তখন আমি তাঁকে একজন ভাই হিসেবে বলেছিলাম আপনি কাজ করতে পারেন তবে এক শর্তে অধিক কাজ করবেন না। এই বাচ্চাটা ৯ মাসের চেষ্টার ফসল।
ক্ষোভ প্রকাশ করে শামীম ওসমান বলেন, আমি জানতে চাই কার নির্দেশে তাঁকে ওএসডি করা হলো। বদলি করলেও একটা কথা ছিল। ওএসডি করার পর বাচ্চা প্রসব করল। সেই বাচ্চাটির যে অবস্থা তাতে আমি শঙ্কিত, বাচ্চাটি বাঁচবে কি না? যদি খারাপ কিছু হয় তাহলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না। তিনি সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে এবিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।