দেশের মোট মোবাইলের ৩৫ দশমিক ৯১ ও পিসির ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকর প্রোগ্রামে আক্রান্ত। সে হিসাবে বিশ্বের ৬০ টি দেশের মধ্যে বাজে সাইবার নিরাপত্তার দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৬ নম্বরে। ম্যালওয়্যারের আক্রমণ, সাইবার নিরাপত্তা প্রস্তুতি, হালনাগাদ সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইন বিবেচনায় এ গবেষণা করেছেন যুক্তরাজ্যের গবেষণা প্রতিষ্ঠান কমপারিটেক।
মোবাইল ফোন আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) হিসাব অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ৯ কোটি মোবাইল ফোন সক্রিয় রয়েছে। ১৫ কোটি সিম সক্রিয় রয়েছে। মোট ফোনের মধ্যে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী ২৫–৩০ শতাংশ। বাংলাদেশ কম্পিউটার বিক্রেতাদের সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে প্রতি বছর ১ লাখ ২০ হাজার ইউনিট পিসি বিক্রি হচ্ছে।
কমপারিটেকের তালিকায় বাংলাদেশের স্কোর ৪৭ দশমিক ২১। বাংলাদেশের পেছনে রয়েছে কেবল উজবেকিস্তান, তানজানিয়া, ভিয়েতনাম,ইন্দোনেশিয়া ও আলজেরিয়া। সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাজে অবস্থা আলজেরিয়ার। তাদের স্কোর ৫৫ দশমিক ৭৫। তালিকায় ৪৭ দশমিক ১০ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে একধাপ এগিয়ে পাকিস্তান। ভারতের অবস্থান ১৫ তম। ভারতের স্কোর ৩৯ দশমিক ৩০। এ তালিকায় যে দেশের স্কোর সবচেয়ে কম সে দেশ সাইবার নিরাপত্তায় তত বেশি শক্তিশালী। তালিকায় মাত্র ৮ দশমিক ৮ স্কোর নিয়ে সাইবার নিরাপত্তার দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে জাপান। এরপরের অবস্থান যথাক্রমে ফ্রান্স, কানাডা, ডেনমার্ক, যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়া।
কমপারিটেক তাদের প্রতিবেদনে যে বিষয়গুলো বিবেচনা করেছে, সেখানে বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাজে অবস্থানে জন্য মোবাইল ম্যালওয়্যার ও কম্পিউটার ম্যালওয়্যারের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। এর মধ্যে ম্যালওয়্যারের আক্রমণের হার বা সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত হালনাগাদ আইন রয়েছে। এ ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা প্রস্তুতির বিষয়টি বিবেচনা করতে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) ২০১৭ সালের গ্লোবাল সাইবার সিকিউরিটি ইনডেক্স (https://www.itu.int/dms_pub/itu-d/opb/str/D-STR-GCI.01-2017-R1-PDF-E.pdf) বিবেচনা করা হয়েছে। ওই তালিকায় বিশ্বে বাংলাদেশর অবস্থান ৫৩।
কমপারিটেকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে আর্থিক খাতে আক্রমণ ১ দশমিক ৩ শতাংশ, আইওটি বা টেলনেট ক্ষেত্রে আক্রমণ দশমিক ৩৮ শতাংশ, ক্রিপটোমাইনারসের আক্রমণ ৩ দশমিক ৩১ শতাংশ।
কমপারিটেক তাদের প্রতিবেদনে আরও বলেছে, কয়েকটি দেশের কিছু কিছু ক্ষেত্রে দুর্বলতা ও কিছু ক্ষেত্রে শক্ত অবস্থান রয়েছে। বাংলাদেশসহ প্রতিটির দেশে সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আরও উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে। কম্পিউটার ও মোবাইল খাতে আরও নিরাপত্তা বাড়ানো, সাইবার নিরাপত্তা আইন শক্তিশালী করার মতো বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিতে হবে।