বিপিএল চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স

বিপিএল চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স

উত্তেজনায় ভরপুর ‘তামিম ইকবালময়’ ফাইনালে দাপুটে জয় তুলে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ন্স। দ্বিতীয়বারের মতো বিপিএল শিরোপা ঘরে তুলতে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ১৭ রানে হারিয়েছে ইমরুল কায়েসের দল। দুই বছর আগে মাশরাফির নেতৃত্বে প্রথম শিরোপা জিতেছিল কুমিল্লা। এই পরাজয়ে টানা দ্বিতীয়বার বিপিএলের রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো সাকিব আল হাসানের দলকে। কুমিল্লার এই জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান ৬১ বলে অপরাজিত ১৪১* রানের ইনিংস খেলা তামিম ইকবালের। বল হাতে সাইফউদ্দিন-ওয়াহাব রিয়াজ-থিসারা পেরেরা দারুণ অবদান রেখেছেন।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রান তাড়ায় নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই মারকুটে সুনিল নারাইনকে রান-আউট করে দেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। অপর ওপেনার উপুল থারাঙ্গার সঙ্গী হয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন রনি তালুকদার। ২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন রনি। হাফ সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে ২৭ বলে ৪ চার ৩ ছক্কায় ৪৮ রানে উপুল থারাঙ্গার ইনিংস থামে তার স্বদেশী থিসারা পেরেরার বলে।

বল হাতে তামিমের কাছে বেদম পিটুনি খেয়েছেন সাকিব। ব্যাট হাতে মাত্র ৩ রান করে ওয়াহাব রিয়াজের বলে সেই তামিমের হাতেই ধরা পড়েন ঢাকা ডায়নামাইটস অধিনায়ক। রনি তালুকদারের ৩৮ বলে ৬ চার ৪ ছক্কায় ৬৬ রানের ইনিংসটি শেষ হয় রান-আউট হয়ে। উইকেটে জুটি বাঁধেন দুই ক্যারিবীয় দানব আন্দ্রে রাসেল এবং কায়রন পোলার্ড। তবে জুটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৩ বলে ৪ রান করে পেরেরার বলে ওয়াহাব রিয়াজের তালুবন্দি হন আন্দ্রে রাসেল। তার স্বদেশি কায়রন পোলার্ডও (১৩) শিকার হন ওয়াহাব রিয়াজের। এবারও ক্যাচ নেন তামিম।

ঢাকা ডায়নামাইটসের পরাজয় তখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। শুভাগত হোম সাইফ উদ্দিনের বলে ‘ডাক’ মারেন। শেষদিকে নুরুল হাসান আর মাহমুদুল হাসান কিছু পাওয়ার হিটিং করে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন। ১৫ বলে ১৮ করে ফেলা নুরুলকে এনামুলের গ্লাভসবন্দি করেন ওয়াহাব রিয়াজ। জয়ের জন্য শেষ ওভারে ঢাকার দরকার ছিল ২২ রানের। ইমরুল কায়েস বোলিংয়ে আনেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে। তৃতীয় বলেই এই তরুণ ফিরিয়ে দেন ৮ বলে ১৫ রান করা মাহমুদুলকে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৮২ রানে থামে ঢাকা ডায়নামাইটস। ১৭ রানের দারুণ জয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তোলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

এর আগে বিপিএলের ৬ষ্ঠ আসরের ফাইনালে আজ শুক্রবার টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ উইকেটে ১৯৯ রানের পাহাড় গড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন এভিন লুইস। তবে এক বাউন্ডারিতে ৬ রানেই তিনি রুবেল হোসেনের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে যান। হাত খুলে খেলতে থাকেন অপর ওপেনার তামিম ইকবাল। এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে গড়ে তোলেন ৮৯ রানের দারুণ জুটি। ৩০ বলে ২৪ রান করা এনামুল সাকিব আল হাসানের শিকার হন। উইকেটে এসেই রান-আউট হয়ে ফিরেন শামসুর (০)।

৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন দেশসেরা ওপেনার। চতুর্থ বাংলাদেশি হিসেবে বিপিএলে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিতে তামিম ইকবাল সময় নেন ৫০ বল। হাঁকান ৮টি চার এবং ৭টি ছক্কা। চলতি বিপিএলের ৬ষ্ঠ আসরের ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরি এটি। ইমরুল কায়েসের সঙ্গে গড়েন অবিচ্ছিন্ন ১০০ রানের জুটি। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৯ রানের পাহাড় গড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ইমরুল খেলেন ২১ বলে ১৭ রানের ইনিংস। তামিম ৬১ বলে ১০ চার ১১ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ১৪১ রানে। বিপিএলে এটাই কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ইনিংস। টি-টোয়েন্টিতে তামিমেরও সর্বোচ্চ ইনিংস এটি। আগেরটি ছিল ১৩০ রান।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর