সৌদি আরবের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ২০১৭ সালে এক আলাপে তার একজন শীর্ষ সহযোগীকে বলেন, যদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি দেশে ফিরে না আসেন কিংবা তার সরকারের সমালোচনা বন্ধ না করেন, তবে তাকে হত্যায় তিনি একটি বুলেট ব্যবহার করতে চান।
দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের এক খবরে এসব তথ্য জানা গেছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যুবরাজ ও তার সহযোগীর কথাবার্তায় দীর্ঘদিন আড়ি পেতেছিল। তাদের কাছ থেকেই এই তথ্য জানা যায়।
তবে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও তার সহযোগী তুর্কি আলদাখিলের মধ্যে এ আলাপ হয়েছিল।
তখন কীভাবে খাশোগিকে সৌদি আরবে ফিরিয়ে আনা যায়, তার উপায় নিয়ে দেশটির কর্মকর্তারা আলোচনা করছিলেন।
এক আলাপে যুবরাজ বলেন, যদি প্রলোভন দেখিয়ে খাশোগিকে সৌদি আরবে ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হয়, তবে তাকে জোর করে নিয়ে আসা হবে। এর পর একটি বুলেট দিয়ে তাকে হত্যা করবেন।
কাজেই বহু আগ থেকেই তাকে হত্যার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে রেখেছিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
গত বছরের ২ অক্টোবর ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর সৌদি কর্মকর্তারা ওয়াশিংটন পোস্টের এ সাংবাদিককে হত্যা করেন।
তবে খাশোগিকে হত্যায় যুবরাজের কোনো ভূমিকা ছিল না বলে জানিয়ে আসছেন সৌদি কর্মকর্তারা। এ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাকে বের করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও প্রকাশ্য কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি।
অসুস্থ ও বৃদ্ধ বাবা বাদশাহ সালমানের পরে সিংহাসনের উত্তরসূরি এই সৌদি যুবরাজ। তাকেই সৌদি আরবের কার্যত শাসক হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় এমবিএস নামে পরিচিত সৌদি যুবরাজকে।
খাশোগি হত্যার মূলহোতাকে বের করতে সম্প্রতি ওই আলাপের প্রতিলিপি তৈরি করে বিশ্লেষণ করেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাসহ দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিভিন্ন সময় আড়ি পেতে সংগ্রহ করা সৌদি যুবরাজের আলাপ ও যোগাযোগের ভাষা পরীক্ষা করে আলাদা করে সাজিয়েছে।
এ হত্যাকাণ্ডের কয়েক সপ্তাহ পর মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ উপসংহার টেনে বলেছে, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানই তাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।