বাংলাদেশ ভবন ইন বিশ্ব-ভারতীঃ দ্য হার্ট অফ প্রাক্টিসিং কালচার অ্যান্ড এডুকেশন অফ সাউথ এশিয়া’’ শীর্ষক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব-ভারতীর ‘বাংলাদেশ ভবন’ বিষয়ে বাংলাদেশে প্রথম সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার জবির মার্কেটিং বিভাগের সভাকক্ষে মার্কেটিং বিভাগ ও জবি রিসার্চ সোসাইটি যৌথভাবে সেমিনারটি আয়োজন করে।
ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব-ভারতীর বিনয় ভবনের প্রাক্তন ডিন (অধ্যক্ষ) প্রফেসর ড. প্রহ্লাদ রায় এই সেমিনারের কী-নোট স্পিকার হিসেবে উক্ত শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্ব-ভারতী প্রতিষ্ঠার বিশেষত্ব ও স্বাতন্ত্র্য আলোচনাপূর্বক এই উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ ভবন স্থাপনের অপরিসীম গুরুত্বের কথা বলেন।
অধ্যাপক প্রহ্লাদ রায় বলেন, অনেক সাধারণ মানুষের ধারণা বাংলাদেশ ভবন মানে হল একটি বিল্ডিং যেখানে জাদুঘরের মত বিভিন্ন স্মৃতিবিজরিত স্মারক চিহ্ন বা সামগ্রী সংরক্ষিত থাকবে; প্রকৃতপক্ষে শান্তিনিকেতনে ভবন অর্থ অনুষদ বা ফ্যাকাল্টি। তিনি আর বলেন, শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সেখানে বাংলাদেশ বিষয়ক একাডেমিক অধ্যয়ন ও গবেষণার দ্বার বিশ্বের দরবারে উন্মোচিত হল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধসহ পূর্বাপর সকল বিষয় এই ভবনের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তিনি মনে করেন এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের সাংকৃতিক আন্তঃসম্পর্ক বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অধ্যাপক ড. প্রহ্লাদ রায় ভবিষ্যতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে শান্তিনিকেতনের সমঝোতা স্মারক সাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্রাহ্ম সমাজ ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শান্তিনিকেতনের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক যোগাযোগের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেয়ার জন্য উপাচার্য প্রফেসর ড. মীজানুর রহমানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও জবি রিসার্চ সোসাইটির মডারেটর শাহ মো. আরিফুল আবেদ শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হবে তরুণ গবেষকদের লীলাভূমি। ভারতে বাংলাদেশ ভবন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ বিষয়ক বিদ্যা চর্চা ও গবেষণার পথ আরো প্রসারিত হবে এবং এতে বাংলাদেশের মর্যাদা বর্হিবিশ্বে আরো সুদৃঢ় হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মার্কেটিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জহিরউদ্দীন আরিফ বলেন, মানবিক গুণ অর্জনের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালিত করতে হলে শিল্প-সাহিত্যের সাথে গভীর সংযোগ প্রয়োজন।
প্রধান আলোচক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. চিন্ময় হাওলাদার প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক যুগের ইতিহাস পর্যালোচনা করে এপার বাংলা এবং ওপার বাংলার সাংস্কৃতিক অভিন্নতার কথা বলেন।
মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান এবং জবি রিসার্চ সোসাইটির পৃষ্ঠপোষক প্রফেসর ড. হুমায়ূন কবির চৌধুরী এই সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন। তিনি বক্তব্যে বলেন, জ্ঞানের তৃষ্ণা ও জানার আগ্রহ থেকে একজন গবেষকের জন্ম হয়। শিক্ষার্থীদের মাঝে গবেষণা চর্চার তাগিদ অনুভবে এই ধরনের সেমিনার ভবিষ্যতে আরো আয়োজন করা হবে বলে তিনি জানান। লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জবি রিসার্চ সোসাইটির আহ্বায়ক সালমান সোহেল সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন।