সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত

সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নবনির্বাচিত সদস্য সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যের মৃত্যুতে আজ সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদে এ শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

অন্য যাদের নামে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে তারা হলেন, সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আবদুল বাতেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম, ড. টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ মাওলানা নুরুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আশরাফুননেছা মোশাররফ ও বোরহান উদ্দিন খান।

এ ছাড়া সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর স্ত্রী মেহজাবীন চৌধুরী, কিংবদন্তী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গীতিকার আমজাদ হোসেন, সঙ্গীত শিল্পী সুরকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃনাল সেন, নারী মুক্তিযোদ্ধা বীর প্রতীক তারামন বিবি, জাতীয় প্রতীকের নকশাকার মোহাম্মদ ইদ্রিস, প্রখ্যাত সাংবাদিক শাহরিয়ার শহীদ, ভাষা সৈনিক সৈয়দ আব্দুল হান্নান, একাত্তরের বীরযোদ্ধা ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার কুলদীপ সিং চাঁদপুরী, চলচ্চিত্র নির্মাতা সাইদুল আনাম টুটুল এবং প্রখ্যাত চিত্রগ্রাহক ও আলোকচিত্রী আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়ায় বিমান দুর্ঘটনায় ও সুনামিতে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলে, আফগানিস্তানে তালেবান হামলায় এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে সংসদের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়।

শোক প্রস্তাবে মৃত্যুবরণকারী সকলের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।

শোক প্রস্তাবে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম একজন মেধাবী, দক্ষ ও বুদ্ধিমান নেতা ছিলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দলের দুঃসময়ে তিনি অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে দল পরিচালনা করেছেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছিলেন একজন বিনয়ী, নিরহঙ্কারী ও চমৎকার মানসিকতার একজন মানুষ। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে সকল গুণাবলীই তার মধ্যে ছিল। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এদেশের মানুষ তাকে চিরদিন তাদের হৃদয়ে লালন করবে।

শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছিলেন একজন সৎ, আদর্শবান দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ। রাজনীতিতে তার মতো নেতার খুবই প্রয়োজন। তিনি ছিলেন একজন অমায়িক মানুষ। কর্মীদের প্রতি তিনি সবসময় অমায়িক আচরণ করতেন।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জাতীয় চার নেতা যেমন বঙ্গবন্ধুর রক্তের সাথে বেইমানি করেনি, তেমনি তাদের সন্তান হিসেবে সৈয়দ আশরাফও বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতি তার আনুগত্য প্রকাশ করে সারাজীবন রাজনীতি করে গেছেন। তার মতো একজন সৎ রাজনীতিকের কথা জাতি চিরদিন স্মরণ করবে।

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ছাত্রজীবন থেকে সৈয়দ আশরাফ রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ৭৫ পরবর্তী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করার যে ষড়যন্ত্র চলছিল, ওই সময় সৈয়দ আশরাফ লন্ডনে ছিলেন। সেখানে থেকে তিনি আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত করতে জোরালো ভূমিকা রেখেছেন।

জাতীয় পার্টির সদস্য রওশন এরশাদ বলেন, সৈয়দ আশরাফ ছিলেন একজন নিবেদিত প্রাণ রাজনৈতিক কর্মী। বড্ড অসময়ে চলে গেলেন, দল ও দেশের জন্য তার মতো রাজনীতিবিদের খুবই প্রয়োজন ছিল।

আলোচনা শেষে মৃত্যুবরণকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন সরকারি দলের সদস্য বজলুল হক হারুন।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর