ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরির পথে সৌদি আরব

ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরির পথে সৌদি আরব

স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া কিছু ছবির ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে সৌদি আরব তার প্রথম ব্যালিস্টিক মিসাইল কারখানা তৈরি করেছে।

এই তথ্য থেকে প্রশ্ন উঠেছে ৩৩ বছর বয়সী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অধীনে দেশটির সামরিক ও পারমাণবিক শক্তির উন্নতির সম্ভাবনা নিয়ে। কেননা তিনি যুবরাজ হওয়ার পর থেকেই একের পর এক আকস্মিক প্রকল্প চালু করেছেন দেশে।

সুতরাং মিসাইল কারখানা স্থাপনও উচ্চাকাঙ্ক্ষী যুবরাজের জন্য অসম্ভব কিছু নয়।

তথ্যটি যদি সত্যি হয়, তবে আল-ওয়াতাহর মিসাইল ঘাঁটির কাছে অবস্থিত এই কারখানাটি সৌদি আরবকে নিজের মিসাইল নিজেই তৈরির সুযোগ করে দেবে; যার ফলে আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ লাগার আশঙ্কা বেড়ে যাবে আরও কয়েক গুণ।

সৌদি আরবের কাছে কোনো পারমাণবিক অস্ত্র নেই বলেই জানে বিশ্ব। সুতরাং ওই সম্ভাব্য কারখানায় তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র প্রচলিত ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রই হবে। কিন্তু এমন একটি মিসাইল তৈরির কারখানা থাকলে সেটা অদূর ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই এই সাম্রাজ্যকে নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড নিক্ষেপের মতো ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির সুযোগ করে দেবে।

ক্যালিফোর্নিয়ার মন্টেরির মিডলবারি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের পারমাণবিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ জেফরি লুইস বলেন, ‘আমরা মনে করে বসে আছি যে সৌদি আরব দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে পারবে না বা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করার কথা ভাবছেও না। কিন্তু এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে আমরা বোধহয় তাদের আকাঙ্ক্ষা এবং যোগ্যতাকে ছোট করে দেখছি।’

লুইসই তার গবেষক দলের সঙ্গে মিলে কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবি বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য ওই মিসাইল কারখানার অস্তিত্ব আবিষ্কার করেছেন।

ওয়াশিংটন পোস্টের হয়ে আরও দু’জন ক্ষেপণাস্ত্র বিশেষজ্ঞ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের মাইকেল এলম্যান এবং সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জোসেফ বারমুডেজ ওই অঞ্চলের স্যাটেলাইট ইমেজগুলো পরীক্ষা করেছেন।

এই দুই বিশেষজ্ঞের মতে, আল-ওয়াতাহ এলাকার হাই রেজ্যুলেশন ছবিগুলো দেখে মনে হয়েছে সেটি একটি রকেট ইঞ্জিন প্রস্তুত ও পরীক্ষাকরণ স্থাপনা। সেখানে কঠিন জ্বালানি ব্যবহার হচ্ছে বলেই ধারণা করছেন তারা।

তবে স্থাপনাটি পুরোপুরি নির্মিত নাকি নির্মাণাধীন তা ছবিগুলো দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না বলে বিশ্লেষকদের সূত্রে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। এমনকি স্থাপনাটি কার্যকর মিসাইল তৈরির যোগ্য কিনা, সেটাও পরিষ্কার নয়।

ওয়াশিংটনে সৌদি দূতাবাসের মুখপাত্র অবশ্য মিসাইল ঘাঁটির কাছে অবস্থিত এই স্থাপনাটি আসলে কী, সে বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এমনকি পেন্টাগন, মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ এবং সিআইএ’ও এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।

আন্তর্জাতিক