রুশ বিপ্লবের পুরোধা ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা ভ্লাদিমির লেনিনের সংরক্ষণ করে রাখা মরদেহ রেড স্কয়ারের সমাধিস্তম্ভেই থাকা উচিত বলে মনে করেন রাশিয়ার আইনপ্রণেতারা (এমপি)।
তাদের দাবি, রাশিয়ার আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সমাধান করার আছে। ১৯১৭ সালের বিপ্লবের এই নেতার মৃত্যুর ৯৫ বছর পূর্তিতে এসব কথা বলেছেন তারা।
১৯২৪ সালের ২১ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন লেনিন। এর কয়েক বছর আগে এক গুপ্তহত্যার হামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হন তিনি। এরপরই তার স্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রবল প্রতিরোধ সত্ত্বেও ৫৩ বছর বয়সী লেনিনের মরদেহ মমি করে জনগণের প্রদর্শনের জন্য মস্কো শহরের কেন্দ্রস্থলে সমাধিস্তম্ভে রাখা হয়।
তারপর থেকেই এই বলশেভিক নেতার মরদেহ সেখানে রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। তবে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর তা সরানোর দাবি উঠে।
রাশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টির একজন সাংসদ আইরি আফোনিন বলেন, দেশটির ভেতরে এমনিতেই আরো অনেক সমস্যা রয়েছে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আমরা খুবই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আছি। যারা বিষয়টি নিয়ে কথা বলছে তারা উসকানিদাতা। তারা সমাজকে দুই ভাগে ভাগ করার কাজ করছে।
গত ডিসেম্বরে লেভাদা সেন্টারে এক জরিপে দেখা গেছে ৪১ শতাংশ তার শেষকৃত্যের ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। আর প্রায় একই পরিমাণ মানুষ তার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তবে ১৮ শতাংশ কোনো মতামত দেয়নি।
ফেয়ার রাশিয়া পার্টির মিখাইল ইয়েমেলিয়ানভ বলেন, লেনিনতো কাউকে বিরক্ত করছে না। তিনি ওখানেই থাকুন না। তার মৃতদেহের ভাগ্য না হয় পরের প্রজন্ম ঠিক করুক। যারা বিষয়টাকে ঐতিহাসিক দিক থেকে বিবেচনা করবে, রাজনৈতিক দিক থেকে নয়। যেমনটা এখন ঘটছে।
ক্ষমতাসীন ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টির ডেপুটি চিফ অ্যান্ড্রে ইসাএভ বলেন, এই বিষয় নিয়ে এখন কোনো অবস্থান নেই। সমাজে এখন আরো বেশি চাপ সৃষ্টিকারী কাজ রয়েছে।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান এমপি ইয়ারোস্লাভ নিলভ লেনিনকে একজন বিরোধীনেতা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তাকে একসময় না একসময় সরানো হবেই; তবে সেটা এখনই না।
বলশেভিক নেতা লেনিনের শেষকৃত্যের কথা বেশ কিছু রাজনীতিবিদ ও মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাওয়া ব্যক্তির মাধ্যমে উঠে এসেছে গত তিন দশকে। সেখানে তারা মমি করা মৃতদেহ রাখার খরচের কথাই বেশি উঠে এসেছে।
অবশ্য ক্রেমলিন কখনো এসব নিয়ে বিতর্কে জড়াতে চায়নি। তাদের দাবি, সেটা হয়তো বাস্তবসম্মত হবে। কিন্তু অনেক মানুষকে আঘাত করবে।