যেটা প্রয়োজন সেটাতো মিটাচ্ছি, তাহলে দুর্নীতি কেন হবে

যেটা প্রয়োজন সেটাতো মিটাচ্ছি, তাহলে দুর্নীতি কেন হবে

সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেটা প্রয়োজন সেটাতো আমরা মিটাচ্ছি। তাহলে দুর্নীতি কেন হবে। মন মানসিকতাটা পরিবর্তন করতে হবে এবং সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আপনাদের দিতে হবে একদম তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত।

প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ নির্দেশনা দেন।

টানা তৃতীয় বার সরকার গঠনের পর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে থাকা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এদিন পরিদর্শনে আসেন প্রধানমন্ত্রী। বিগত সরকারের সময়ের মতো মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি বাড়াতে এবং সৃজনশীলতার বিকাশে এবারও পর্যায়ক্রমে সবগুলো মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী। জনপ্রশাসন দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়।

শেখ হাসিনা জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট একটি নির্দেশনা দিতে হবে- কেউ দুর্নীতি করলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেণ, কারণ যে হারে বেতন আমরা বাড়িয়েছি। এ উদাহরণ মনে হয় পথিবীর কোনও দেশেই নেই।

সন্ত্রাস-মাদক-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যহত থাকবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

‘লক্ষ্য বাস্তবায়নে তাঁর সরকার সন্ত্রাস,মাদক এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে,’ বলেন তিনি।
উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যায় পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, যে লক্ষ্য আমরা নিয়েছি তা আমরা পূরণ করতে পারবো, তার জন্য প্রয়োজন সুশাসন, তার জন্য দরকার দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা।

জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের সততা-আন্তরিকতা নিয়ে জনসেবা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা সরকার পরিচালনার মূল জায়গাটায় হল আপনাদের এই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। অনেক বিশাল এক কর্মযজ্ঞ এখানে। সেক্ষেত্রে আপনাদের দায়িত্ব কিন্তু অনেক অনেক বেশি।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্র জনপ্রশাসন। আপনাদের সেভাবে কাজ করতে হবে, আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে অনুরোধ করবো, একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, দেশটা আমাদের। আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছি। আজকে সারাবিশ্বে একটা সম্মানজনক জায়গায় আসতে পেরেছি।

তিনি জনপ্রশাসনে বিশেষ দক্ষতার স্বীকৃতি স্বরুপ তাঁর সরকারের জনপ্রশাসনর পদক প্রবর্তনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, কাজে কে কতটা দক্ষতা ও যোগ্যতা দেখাতে পারছে, তার ওপর আমরা জনপ্রশাসন পদক প্রবর্তন করেছি।

জনপ্রশাসনে পদোন্নতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রশাসনসহ সবক্ষেত্রে শুধুমাত্র জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নয় এখানে দক্ষতাকেও প্রাধান্য দিতে হবে। কে কতো বেশি কাজ করতে পারে, সততার সঙ্গে কাজ করতে পারবে এবং নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চলবে, সব কিছু বিবেচনা করে প্রমোশন হওয়া উচিত।

যে যে বিষয়ে অভিজ্ঞ তাকে সেই বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি পদ ফাঁকা থাকলেই পদায়ন না করে যার যে বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ রয়েছে তাকে সেই জায়গায় পদায়ন করারও নির্দেশনা দেন।

স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বক্ষেত্রে এই ডিজিটাল সুবিধা ব্যবহার করতে হবে। এর মাধ্যমে আমি মনে করি স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত হতে পারে।

একটা সময় বাংলাদেশে দরপত্র বাক্স ছিনতাই হত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কারণে আমরা ই-টেন্ডারে চলে গেলাম। এখন আর টেন্ডার বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনা শোনা যায় না।

‘এভাবেই আমি মনে করি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা অনেকটা নিশ্চিত করা যায়। আমরা সেটাও করবো,’ যোগ করেন তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মোঃ আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর গত ৭ জানুয়ারি ৪৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। এ মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রী রয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রিত্বের পাশাপাশি শেখ হাসিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।

Featured বাংলাদেশ শীর্ষ খবর