বন্দর দিয়ে কী আসছে কর্তৃপক্ষের জানা নেই

বন্দর দিয়ে কী আসছে কর্তৃপক্ষের জানা নেই

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা বিভিন্ন কন্টেইনারে কী ধরনের মালামাল আসছে তা জানে না খোদ বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। এর কারণ হিসেবে তারা বলছে, বন্দরের চারটি স্ক্যানিং মেশিনই কাস্টমস কর্তৃপক্ষের অধীনে।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির কমিটির ৩৫তম বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

স্ক্যানিং রিপোর্ট কাস্টমসের কাছে চাইলেও তা পাচ্ছে না চবক। বিষয়টি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলেও মনে করছে কর্তৃপক্ষ।

কমিটির সভাপতি নূর-ই-আলম চৌধুরী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। কমিটির সদস্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রী মো. শাজাহান খান, মোস্তাফা কামাল পাশা, হাবিবুন নাহার, সামশুল হক চৌধুরী, নসরুল হামিদ ও মো. নজরুল ইসলাম বাবু বৈঠকে অংশ নেন।

কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে কন্টেইনার স্ক্যানিং সংক্রান্ত তথ্য চাইলেও তা পাচ্ছে না বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগ। এমনিক কার্গোতে কী ধরনের মালামাল আসছে সে সম্পর্কেও নিরাপত্তা বিভাগ অন্ধকারে থাকছে।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদনও দিয়েছে চট্টগ্র্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে বলা হয়েছে, বিষয়টি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। একই সঙ্গে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এদিকে সংসদীয় কমিটি বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার সুপারিশ করেছে। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি নূর-ই-আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা অপ্রতুল। কমিটি বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের নিজস্ব জনবল বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।’

চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় ১২৬টি সিসিটিভি রয়েছে জানিয়ে সভাপতি বলেন, ‘বিশাল এলাকায় এত কম সিসিটিভি দিয়ে কাজ চালানো সম্ভব নয়। কমিটির আরও ১৭০টি সিসিটিভি কেনার সুপারিশ করেছে।’

কমিটির কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, চবকের নিরাপত্তা বিভাগের বর্তমান জনবল ৬১৮ জন। এর সঙ্গে ৬৪২ জন আনসার সদস্য দিয়ে ৩৮৭টি পয়েন্টে পাহারার মাধ্যমে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি কোম্পানি ও ৩৩৪ জন পুলিশ সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে।

এদিকে সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে কর্ণফুলী ব্রিজ থেকে চট্রগ্রাম বিমান বন্দর পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। ফ্লাইওভার নির্মাণের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীর সমন্বয়ে কমিটি গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়।

এছাড়া বৈঠকে অতিদ্রুত পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার নৌ-টার্মিনাল চালুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) নিজস্ব জায়গায় আন্তর্জাতিক মানের এক্সপোজিশন-কাম-কনভেনশন সেন্টার নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এক্সপোজিশন-কাম-কনভেনশন সেন্টার নির্মাণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সার্ভে করে প্রতিবেদন দাখিলের লক্ষ্যে চট্রগ্রাম নির্বাচনী এলাকার তিনজন সংসদ সদস্য, বিএসসি, চট্রগাম বন্দর ও মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিবের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল মান্নান হাওলাদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

অর্থ বাণিজ্য