শীতে ঘিয়ের ৫ ব্যবহার

শীতে ঘিয়ের ৫ ব্যবহার

‘পদ্মার ইলিশ আর পাবনার ঘি/জামাইয়ের পাতে দিলে আর লাগে কি?’—ঘি নিয়ে এমন নানা প্রবাদ শোনা যায়। তবে খাঁটি ঘিয়ের গুণ শুধু মুখে মুখেই ফেরে না, কাজের বেলায়ও ঘি অতুলনীয়। এই শীতে শরীরটাকে চাঙা রাখতে ঘি বেশ শক্তি জোগায়। খাঁটি ঘিয়ে রয়েছে বিস্ময়কর কিছু গুণ, যা এই শীতে শরীরের জন্য দারুণ উপকারী। এটি স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা সম্পৃক্ত চর্বির উৎস। যদিও ঘি খাওয়ার বিষয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে, তবে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ঘি স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অব মেডিকেল রিসার্চ’–এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্দি-কাশি সারাতে, দুর্বলতা কাটাতে, ত্বকের সমস্যা দূর করতে ঘি ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া ঘিয়ে পেঁয়াজ ভেজে খেলে গলা ব্যথা সারে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, শীতকালই ঘি খাওয়ার উপযুক্ত সময়। এ সময় এটি সহজে হজম হয় ও শরীর গরম রাখে। এতে ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে আছে। দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার পাশাপাশি পেশি সুগঠিত রাখতে ঘি কার্যকর। এ ছাড়া শীতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া ঠেকাতে পারে ঘি। প্রতিদিন সকালে এক বা দুই চা-চামচ ঘি খাওয়া যেতে পারে। এরপর গ্রিন টি বা সাধারণ চা ও কফি খেলে উপকার পাওয়া যায়। ঘি অবশ্য অল্প পরিমাণে খাওয়াই ভালো। যাদের কোলস্টেরলের সমস্যা আছে, তাদের অবশ্য ঘি এড়িয়ে চলাই উচিত।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ঘি খাওয়ার পাশাপাশি ত্বকের জন্যও দারুণ উপকারী। বিশেষ করে ত্বকের যত্নে পুরোনো ঘিয়ের গুণাগুণ অনেক। ত্বকের যত্নে ঘি ব্যবহার করলে পাবেন নানা সুবিধা। খাবারে ঘিয়ের ব্যবহার যেমন স্বাদ কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলে, তেমনি উপকারী রূপচর্চাতেও। জেনে নিন ত্বকের যত্নে কেন ঘি ব্যবহার করবেন।

ত্বকের শুষ্কতা কমায়
যাদের বছরজুড়ে ত্বক শুষ্ক থাকে তাদের জন্য ঘি দারুণ কার্যকর। কয়েক ফোঁটা ঘি আপনার ত্বকে মালিশ করুন। কয়েক মিনিট ধরে মালিশ করতে থাকলে তা ত্বকের ওপর একধরনের সুরক্ষা আবরণ তৈরি করবে, যা ত্বক শুষ্ক হওয়া ঠেকাতে পারবে। ঘি ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘ই’ ও ‘কে’ সরবরাহ করে। ফলে ত্বক হয় আরও উজ্জ্বল।

বলিরেখা দূর করে
যাঁরা ভাবেন ঘি শুধু খাবারের সুগন্ধ বাড়ায়। তাঁদের জন্য সুখবর হচ্ছে, এটা আপনার তারুণ্য ধরে রাখতে পারে। কারণ, ঘিয়ে আছে ভিটামিন ই। যা বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে পারে। নিয়মিত ঘি খেলে ত্বকে সহজে বলিরেখা পড়ে না। ত্বকে আর্দ্রতা আনতে নানা ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা হয়। এবার ঘি ব্যবহার করে দেখুন। প্রাকৃতিকভাবেই আপনার ত্বক আর্দ্র হয়ে যাবে। কোনো কারণে যদি আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে, তাহলে খাদ্যতালিকায় ঘি রাখুন।

গোসলের তেল
গোসলের আগে দারুণ তেল হিসেবে ব্যবহার করা যায় ঘি। পাঁচ চামচ পরিমাণ ঘি নিয়ে তা ১০ ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে শরীরে মাখতে পারেন। গোসলের আগে এ তেল মাখলে ত্বক সতেজ ও নরম হয়। ত্বকের রুক্ষতা দূর হয়।

চোখের ক্লান্তি দূর
যাঁরা চোখে ক্লান্তি অনুভব করেন, তাঁরা কয়েক ফোঁটা ঘি চোখের চারপাশে লাগাতে পারেন। তবে চোখের ভেতর যেন তা না যায়। চোখের চারপাশে ঘি মালিশ করলে চোখ আগের চেয়ে বেশি সতেজ ও প্রাণবন্ত দেখাবে। চোখের ক্লান্তিভাব কেটে যাবে।

সতেজ ঠোঁট
ঘিকে প্রাকৃতিক তেল বলা হয়। তাই এটি ঠোঁটে নিলে চকচকে ও নরম দেখায়। শুষ্ক ও ফাটা ঠোঁটের যন্ত্রণা এড়াতেও ঘি ব্যবহার করুন। ঠোঁট ভালো রাখার জন্য লিপবামের চেয়ে কার্যকর ঘি। অল্প একটু ঘি আঙুলে নিয়ে তারপর সেটা ঠোঁটে লাগান। কয়েকবার ব্যবহারের পরই দেখবেন, আপনার ঠোঁট কোমল হয়ে উঠবে আর ফুটিয়ে তুলবে গোলাপি আভা।

অন্যান্য