চীনের কাছ থেকে স্বাধীনতা প্রাপ্তির আন্দোলন আরো জোরদার করতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উইঘুর নৃগোষ্ঠীর প্রায় ২শ’ নেতা পাঁচ দিনব্যাপী এক সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। সোমবার জাপানের রাজধানী টোকিওতে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়েছে।
চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়ান প্রদেশে বসবাসরত উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠীর অভিযোগ, স্বদেশভূমিতেই তারা সরকারের নিপীড়নের শিকার এবং তাদের কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। এই ভূখণ্ডে হান চীনাদের অভিবাসনের মাধ্যমে সরকার তাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতে পরিণত করছে বলে তাদের অভিযোগ।
জিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় ৯০ লাখ উইঘুরের বাস। এখানে নৃতাত্বিক দ্বন্দ্বের জেরে হান এবং উইঘুর মুসলিমদের মধ্যে একাধিকবার সহিংস ঘটনা ঘটেছে।
সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেসের নির্বাসিত নেতা রেবিয়া কাদির বলেন, ‘আধুনিক গণতন্ত্রের এই যুগে জোর করে আমাদের স্বকীয় পরিচয় মুছে ফেলার বেইজিং নীতি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। আশা করছি চীন সরকার আমাদের দমন করার পরিবর্তে রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে তাদের কর্তৃত্ববাদী নীতিতে পরিবর্তন আনবে।’
তিনি বলেন, ‘চীন সরকারের নীতি হলো মূল ধারার সমাজে জোরপূর্বক অঙ্গীভূতকরণ এবং শেষপর্যন্ত উইঘূর এবং অন্য আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর অস্তিত্ব মুছে ফেলা… যখন চীন বিশ্ব শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।’
চীনা স্টাইলের কমিউনিজম, মানবাধিকার এবং গণতান্ত্রিকীকরণ যুগপযোগী নয় বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত এ উইঘুর নেতা। সুতরাং চীনের সামনে এখন গণতন্ত্র আর শান্তিকে আলিঙ্গন করা ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা নেই বলে মত দেন তিনি।
সম্মেলনে সারা বিশ্ব থেকে ২০টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধি অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন রেবিয়া কাদির। বিশ্ব উইঘুর কংগ্রেসের এটি চতুর্থ সম্মেলন। এর আগে জার্মানির মিউনিখ, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সম্মেলনে করে উইঘুর কংগ্রেস। এবারের সম্মেলনে জাপানের মধ্যডানপন্থি বিরোধী দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির আইনপ্রণেতা, ইতালীয় রাজনীতিবিদ এবং মার্কিন মানবাধিকার কর্মীরা যোগ দিয়েছেন।
চীন সরকার অবশ্য বিশ্ব উইঘুর কংগ্রেসকে বিচ্ছন্নতাবাদী সংগঠন বলে বিবেচনা করে। উইঘুর নেতা কাদিরকে ভিসা দেওয়ার জন্য জাপানের সমালোচনা করেছে তারা।
কাদির সর্বশেষ জাপান সফর করেছেন ২০০৯ সালে।