চট্টগ্রামে পুলিশ-জোটকর্মী সংঘর্ষ গভীর রাতে চার মামলা, এমপিসহ আসামি ১৭০০

চট্টগ্রামে পুলিশ-জোটকর্মী সংঘর্ষ গভীর রাতে চার মামলা, এমপিসহ আসামি ১৭০০

চট্টগ্রামে রোববার পুলিশের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত সহ ১৮ দলীয় জোটের কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় নগর জামায়াতের আমির ও সাংসদ আ ন ম শামসুল ইসলাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক আসলাম চৌধুরী সহ প্রায় এক হাজার সাত’শ নেতাকর্মীকে আসামি করে কোতয়ালী থানায় চারটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এছাড়া নগরীর খুলশী থানায় আরও দুটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন সংশিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মফিজুল ইসলাম।

রোববার গভীর রাতে কোতয়ালী থানা পুলিশ বাদি হয়ে এই চারটি মামলা দায়ের করে। কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) রফিকুল ইসলাম মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করেছেন।

ওসি বাংলানিউজকে বলেন, ‘১৮ দলীয় জোটের কর্মসূচি থেকে পরিকল্পিতভাবে পুলিশের উপর হামলা করা হয়েছে। গাড়ি ভাংচুর করে, আগুন দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এজন্য দ্রুত বিচার আইনে ও পুলিশের উপর আক্রমণের অপরাধে চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

চারটি মামলার মধ্যে কোতয়ালী থানার পাথরঘাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ পরিদর্শক বা এসআই জাফর ও বক্সিরহাট ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই হারুন বাদি হয়ে পুলিশের উপর আক্রমণের অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করেছেন।

এছাড়া কোতয়ালী থানার এসআই শাহআলম ও এএসআই রফিক বাদি হয়ে দ্রুত বিচার আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেলে ঘটনাস্থল থেকে কোতয়ালী থানা পুলিশ ২৯ জনকে আটক করেছেন। তাদের দ্রত বিচার আইনের মামলা দুটিতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এছাড়া পুলিশের উপর আক্রমণের অভিযোগে দায়ের হওয়া দুটি মামলার প্রতিটিতে ১৭০ থেকে ১৮০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৬’শ জনকে আসামি করা হয়েছে।

নাম উল্লেখ করা আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হচ্ছেন, সাংসদ আন ম শামসুল ইসলাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আসলাম চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত, নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল হাশেম বক্কর, সাবেক কাউন্সিলর মো.শাহআলম, ছাত্রদল নেতা কামরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এস কে খোদা তোতন।

দুটি মামলায় এজাহারনামায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের পলাতক আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছে।

এদিকে রাত দু’টায় কোতয়ালী থানায় গিয়ে দেখা গেছে, থানার ফটকের সামনে শতশত মানুষের ভিড়। গ্রেপ্তার হওয়া কর্মীদের স্বজনরা ভীড় জমিয়েছেন থানার সামনে। অনেকে পুলিশের কাছে গিয়ে তাদের স্বজনদের ছেড়ে দেয়ার জন্য আকুতি মিনতি করছেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা এম এ মালেককেও থানায় কয়েকজনকে ছাড়িয়ে নিতে তদবির করতে দেখা গেছে।

খুলশী থানার ওসি মফিজুল ইসলাম জানান, নগরীর লালখান বাজার মোড়ে একটি মার্কেটের উপর হামলা ঘটনায় এবং গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে মোট দু’টি মামলা দায়ের করা হচ্ছে।

এর আগে রোববার বিকেলে নগরীর নাসিমন ভবনের বিএনপি কার্যালয়ের আশপাশের এলাকায় সমাবেশ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের সঙ্গে জোটের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

নগরীর কাজীর দেউড়ির মোড়ে জামায়াত-শিবিরের একটি মিছিলকে সারিবদ্ধভাবে সমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য পুলিশের অনুরোধকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

প্রায় দু’ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক, জোটের নেতাকর্মী সহ কমপক্ষে ১০০ জন আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৯ জনকে।

এ ঘটনায় সোমবার চট্টগ্রামে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ১৮ দল।

রাজনীতি